রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৩

আহমদ ছফার বাংলাদেশ

আহমদ ছফা আমাদরে দশেরে শ্রষ্ঠে লখেকদরে মধ্যে একজন। আমি সবনিয়ে নবিদেন করি তনিি আমাদরে যুগরে শ্রষ্ঠে চন্তিাশীলদরে মধ্যওে শ্রষ্ঠে। আমরা এতদনিে আর রবীন্দ্রনাথরে যুগে নাই। সাহস করযি়া বলবি নজরুল ইসলামরে যুগও যায় যায়। আমাদরে যুগ আহমদ ছফার যুগ। আমি জানি আমার কথায় অনকেইে বস্মিতি হইতছেনে। কথাটা এক হাজার শব্দরে মধ্যে যতটুকু পারি বলতিছে।ি

২৮ জুলাই আহমদ ছফা মৃত্যুবরণ করযি়াছনে। সে আজকিার কথা নহ।ে ২০০১ ইংরজেরি ২৮ জুলাই। এই ২৮ জুলাই লইয়া বারো বছর হইল। বাংলা হসিাবে বারো বছরে এক যুগ। কন্তিু আহমদ ছফার যুগ বলতিে আমি শুদ্ধ এই বারো বছর বুঝাইতছেি না।

আহমদ ছফা জন্মযি়াছলিনে পরাধীন ভারতর্বষরে পশ্চাৎপদ এক প্রদশে এই বাংলায়। তাহার জন্মরে বছর ১৯৪৩ সালথে দশেে আকাল মানে র্দুভক্ষি চলতিছেলি। সইে আকালে মধ্যবত্তি সমাজরে অনুমান অনুযায়ী বলতিে ৫০ লাখ লোক অনাহারে মারা গযি়াছলি। তাহার জন্মরে চারি বৎসররে মাথায় ব্রটিশি শাসতি ভারতর্বষ ভাগ করযি়া দুইটি নতুন দশে বানানো হইয়াছলি। সইে নতুন দুই দশেরে মধ্যে ছোটটরি র্গভ হইতে বাংলাদশেরে জন্ম হইল। ততদনিে আহমদ ছফার উমর সাতাশ পার হইতছে।ে

বাংলাদশেরে জন্ম প্রক্রযি়া লইয়া যে বর্তিক পণ্ডতি সমাজে বরিাজ করতিছেে আহমদ ছফা তাহার একটা মীমাংসা প্রস্তাব করযি়াছলিনে। এই দশেরে জন্ম প্রক্রযি়াকে তনিি যুক্তসিঙ্গত কারণইে দখেযি়াছলিনে ভারতীয় (ওরফে নখিলি দক্ষণি এশযি়াব্যাপী) পটভূমতি।ে

১৯৭১ সালে যখন বাংলাদশেরে মুক্তযিুদ্ধ চলতিছেলি, যখন বাংলাদশেরে ভাগ্য কছিু পরমিাণে হইলওে আন্তঃমহাদশেীয় রাজনীতরি গতবিধিরি ওপর হলোন দযি়া দাঁড়াইয়াছলি, তখন র্বতমান ভারতরে রণনীতবিদিরা বলতিছেলিনে বাংলাদশেরে জন্ম প্রমাণ করতিছেে ১৯৪৭ সালরে ভারত বভিাগটা ভুল ছলি। মানে বাংলাদশেরে জন্ম হইলে খণ্ড ভারত আবার অখণ্ড হইব,ে ভাঙা বাংলা আবার জোড়া লাগবি।ে মজার মধ্য,ে আহমদ ছফার ভাষায় বলতিছে,ি বাংলাদশে স্বাধীনতা র্অজন করযি়া ভারতরে সঙ্গে যোগ দলি না, আলাদা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র আকারে মাথা তুলযি়া দাঁড়াইল।

দখেযি়া শুনযি়া অনকে বশ্লিষেণ করযি়া বাংলাদশেরে যে শ্রণেীর বুদ্ধজিীবীরা যুদ্ধে কোনো ভূমকিা গ্রহণ করনে নাই তাহারা বলতিে লাগলিনে বাংলাদশে জন্মযি়াছে ১৯৪০ সালরে তথাকথতি লাহোর প্রস্তাবরে আওতায়। সইে প্রস্তাবে ব্রটিশি ভারতরে মুসলমান সংখ্যাগুরু অঞ্চল লইয়া একাধকি রাষ্ট্র গড়ার দাবি তোলা হইয়াছলি। সইে প্রস্তাবটি পরে ১৯৪৬ সাল নাগাদ সংশোধন করযি়া এক পাকস্তিান রাষ্ট্র দাবি করা হইয়াছলি। বদরুদ্দীন উমররে মতো মধ্যবত্তি বুদ্ধজিীবীও বাংলাদশে রাষ্ট্র দখেযি়া বললিনে, এই রাষ্ট্র লাহোর প্রস্তাবরে পুনরুজ্জীবন বশিষে।

আহমদ ছফা এই দুই মতবাদরে কোনোটাকইে গ্রহণ করনে নাই। তনিি বলতিনে বাংলাদশেরে স্বাধীনতা প্রমাণ করযি়াছে ভারতর্বষ যমেন গান্ধী-নহেরুর এক জাতরি দশে নহ,ে তমেনি জন্নিাহ প্রভৃতরি দুই জাতরিও নহ।ে আহমদ ছফার অঙ্গীকার : 'ভারতর্বষ (উপমহাদশে) বহু জাত,ি বহু র্ধম, বহু র্বণ এবং বহু ভাষার দশে।'

র্দুভাগ্যরে মধ্য,ে এই বহু জাতরি প্রশ্নটি ব্রটিশিবরিোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে কখনোই 'মুখ্য এবং প্রণধিানযোগ্য' দাবি আকারে র্মূতলিাভ করে নাই। শুধু ১৯৭১ সালে আসযি়া এই সত্য প্রথম র্মূতি পাইল। আহমদ ছফার ভাষায়, বাংলাদশে রাষ্ট্ররে জন্ম প্রক্রযি়ার মধ্য দযি়া দক্ষণি এশযি়া বা ভারতীয় উপমহাদশে 'নতুন এক রাজনতৈকি কক্ষপথ'ে প্রবশে করযি়াছ।ে

কথা হইতছে,ে কথাটা বুঝতিে আমাদরে এত দরেি হইল কনে? আহমদ ছফা তাহারও একটা ব্যাখ্যা খাড়া করযি়াছনে। তাহার কথার সারর্মম দাঁড় করাইলে এই দাঁড়ায় যে দশেটার জন্ম হইয়াছে একটা অজ্ঞান পর্দাথরে ন্যায়। তনিি বললিনে, ১৯৪৮ হইতে ১৯৭১ র্পযন্ত সে কালরে র্পূব পাকস্তিান কখনো রাষ্ট্রভাষা, কখনো সংখ্যাসাম্য, কখনো ছয় দফা, কখনো স্বায়ত্তশাসন দাবি করযি়াছ,ে আর কখনো দাবি করযি়াছে স্বাধীনতা। আহমদ ছফা বললিনে, এই সকল আন্দোলনরে মধ্যইে র্মূতি পাইয়াছলি 'একটি ভাষাভত্তিকি জাতীয় রাষ্ট্র' প্রতষ্ঠিার সংগ্রাম। এইটাই ছলি এই সমস্ত গণ-সংগ্রামরে প্রকৃত রূপ। আর তাহার সংস্কৃত রূপ ছলি সামাজকি, রাজনতৈকি, আঞ্চলকি নানা রকম টানাপড়নে এবং অসঙ্গত।ি

মজার বষিয়, বাংলাদশেে যে নতুন জাতি জন্মগ্রহণ করতিছেে তাহার নায়করোও তাহা স্বজ্ঞানে জানতিনে না। আহমদ ছফা দখোইয়াছনে, এই জাতরি নায়করো একটি আলাদা রাষ্ট্র তরৈি করার মতো কোনো মনোবল বা প্রস্তুতি স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হওয়ার কয়কে দনি আগে র্পযন্ত গ্রহণ করনে নাই।

ভারত বাংলাদশেরে মুক্তি সংগ্রাম,ে মানে এ দশেরে আঁতুড়ঘর,ে ধাত্রীর ভূমকিা পালন করযি়াছলি। ভারতরে জনসাধারণরে সম্মুখে ভারতরে শাসকরো দাবি করযি়াছলিনে তাহারা পাকস্তিান ভাঙযি়া প্রমাণ করবিনে ১৯৪৭ সালরে দশেভাগ কত বড় ভুল ছলি। আর বাংলাদশেরে নতোরা দাবি করযি়াছলিনে তাহারা পাকস্তিান ভাঙযি়া আর একটি র্সাবভৌম দশে তরৈি করবিনে।

এই জায়গায় প্রশ্ন উঠলি, নতুন র্সাবভৌম দশেটরি আর্দশ কি হইব।ে এই দশে যদি দ্ব-িজাতি তত্ত্ব বা হন্দিু মুসলমি ভদোভদে নীতি র্বজন করযি়া চলে তবে কোনো নীতি বা আর্দশ তাহার পায়রে তলার মাটি হইব?ে আহমদ ছফা এই নীতরি মধ্যইে বাংলাদশেরে আপন ভবষ্যিৎ দখেযি়াছনে। শুধু তাহাই নহ,ে র্বতমান ভারতরে ভতেরে যে সকল জাতসিত্তা সংগ্রাম করতিছেে তাহাদরে ভবষ্যিৎও দখেতিে পাইলনে।

কন্তিু এই সত্যটি কি ভারত রাষ্ট্ররে র্কণধাররা দখেতিে পান নাই? পাইয়াছলিনে। কন্তিু তাহাদরে করার বশেি কছিু ছলি না। কারণ বাংলাদশেরে জনগণ যাহা চাহযি়াছে তাহার বাহরিে বশেি দূর যাওয়ার ক্ষমতা তাহাদরেও ছলি না। তাই তাহারা যাহাকে দুই মন্দরে মধ্যে বহেতর ভাবযি়া পাইলনে তাহাই করলিনে। বাংলাদশেরে জন্ম ভারতরে একজাতি তত্ত্বরে প্রবক্তাদরে জন্য একটা খারাপ উদাহরণ হসিাবে খাড়া হইল। তাই তাহারাও সাড়া দলিনে নতুন দ্ব-িজাততিত্ত্ব।ে মানযি়া লইলনে, বাংলাদশে লাহোর প্রস্তাবরে মানস-সন্তান বট।ে বাংলাদশেি জাতীয়তাবাদরে ভত্তিি মুসলমান জাতীয়তা বা সাম্প্রদায়কিতা ভন্নি আর কছিুই নহ।ে আবুল মনসুর আহমদ কংিবা বদরুদ্দীন উমররে মতো (সামাজকি দকি হইতে মুক্তযিুদ্ধে অংশগ্রহণ না করা) বুদ্ধজিীবীরা এই তত্ত্বরে আগুনে ঘৃতাহুতি দতিে থাকলিনে। ইহাতে চতুর ভারতীয় নতোরাও সায় দলিনে। আনন্দবাজার পত্রকিা যাহাদরে র্তীথস্থান তাহারা এই মতবাদে বশিষে প্রীত হইলনে।

সবচযে়ে বশেি র্মমান্তকি বষিয় হইল যে রাজনতৈকি দলরে নতেৃত্বে বাংলাদশে স্বাধীন হইল, সইে আওয়ামী লীগরে র্কণধাররোও বাংলাদশেরে নতুন ভাষাভত্তিকি জাতীয় রাষ্ট্ররে স্বরূপ কি তাহা সঠকি নর্ণিয় করতিে পারনে নাই। আহমদ ছফার মত,ে তাহারা বাংলাদশেে একটি রাষ্ট্রসত্তার জন্ম দযি়া ভারতীয় উপমহাদশেে অনকে অনকে রাষ্ট্রসত্তা জন্মরে প্রসববদেনা তরৈি করলিনে, 'অজান্ত'ে নতুন একটি রাজনতৈকি কক্ষপথে প্রবশে করলিনে পুরা উপমহাদশেকইে। 'অজান্ত'ে মানে এ বষিয়ে তাহারা নজিরোও সবশিষে ওয়াকবিহাল ছলিনে না।

এই স্ববরিোধরে মধ্যইে আহমদ ছফা শখে মুজবিরে পতনরে কারণ আবষ্কিার করযি়াছলিনে। তাহার কথায়, 'ক্ষমতায় চড়ার তনি বছররে মাথায় আওয়ামী লীগরে ভরাডুবি এবং সপরবিারে শখে মুজবিরে নহিত হইবার এটা একটা কারণ।'

১৯৯৩ সালে দওেয়া একটি শ্রুতলিখিনে আহমদ ছফা দখোইয়াছলিনে, শখে মুজবিরে পতনরে পর যে দল বা যে প্রবণতা ক্ষমতা দখল করে তাহারা এই স্ববরিোধরে সমাধান করলিনে, লাহোর প্রস্তাবরে দকিে ফরিযি়া গলেনে। শখে মুজবিরে অন্তত একটা স্ববরিোধ ছলি। ইহারা নর্বিরিোধ হইতে চাহলিনে। হয়তো হইলনে নর্বিোধই।

আহমদ ছফা লখিযি়াছলিনে, বএিনপি নামে যে দলটি ১৯৯৩ সালে ক্ষমতায় ছলি তার মানসকি অবস্থান আওয়ামী লীগরে পছিন।ে তাহারা যদি পারতিনে ১৯৪০ সালরে লাহোর প্রস্তাবরে অবস্থানে ফরিযি়া যাইতনে।

মাঝখানে একটি মুক্তযিুদ্ধ ঘটযি়া যাওয়ায় পাশ কাটাইতে পারতিছেনে না।

আহমদ ছফার সদ্ধিান্তটা ক?ি বাংলাদশে রাষ্ট্ররে ভবষ্যিৎ তাহার আর্দশরে মধ্যইে। সইে আর্দশ ধারণ করবিার শক্তি যমেন আওয়ামী লীগরে নাই, তমেনি নাই বএিনপরিও। এই আর্দশ গড়যি়া তুলবিার কংিবা সইে আর্দশরে পতাকাতলে দাঁড়াইবার মতো রাজনতৈকি দল বাংলাদশেে গড়যি়া উঠে নাই।

এই হতাশা ১৯৯৩ সালে যে পরমিাণ সত্য ছলি আজ ২০ বছর পর এই ২০১৩ সালওে সমান সত্য।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন