মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৪

হুদহুদ রহস্য (Hudhud Mystery)/ (Hoopoe mystery)

হুদহুদ রহস্য (Hudhud Mystery)/ (Hoopoe mystery)
‘الهدهد الغموض’ (আলহুদহুদ আলগামুদ)
Cervix 3


‘হুদহুদ’ ঘূর্ণিঝড়; গরুড়; Hoopoe নাকি ভৃগু?
‘Hudhud’ Cyclone; Garuda; Hoopoe or Cervix?
‘’هدهد’؛ الإعصار غارودا. الهدهد أو عنق الرحم؟’
(হুদহুদ, আলয়াসার; গারুদা; আলহুদহুদ আও উনুক্ব আররেহেম?)
পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড়‘হুদহুদ’ সামান্য পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে সরে গিয়ে আরো ঘণীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি.। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০০৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৪০ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ (দুই) নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বুধবার বিকেলের পর থেকে ঘূর্ণিঝড়টি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আগামী রোববার বিকেল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উপকূলীয় অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িষ্যায় আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিদফতর আরো জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে ভয়‍াবহ ঘূর্ণিঝড়ে রুপান্তরিত হচ্ছে। যা ঘণ্টায় ১৪০ কি.মি. বেগে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তম ও ওড়িষ্যার গোপালপুর রিসোর্টে আঘাত হানবে। (তথ্যসূত্রঃ ইন্টার্নেটঃ ৭১ বাংলা/এস এইস)
Hudhud 14 Hudhud 15
পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে ‘হুদহুদ’। এটি একটি আরবি পরিভাষা। একে পুরাণে গরুড়, কুরানে ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) এবং গ্রিক মিথোলজিতে Hoopoe (হুপী) বলা হয়েছে। কেন এরূপ নামকরণ করা হলো? এর উত্তরে জলবায়ুবিদরা বলেছেন। এটি একটি দৃষ্টিনন্দন পাখি তাই এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। আমাদের কথা হলো এর চেয়েও দৃষ্টিনন্দন পাখি রয়েছে। যেমন- ময়ুর, পারাবত, ঈগল ও ময়না ইত্যাদি। তবে এমন প্রলয়ঙ্করি ঘূর্ণিঝড়ের এরূপ নামকরণ করার কারণ কী?
এবার আমাদের ভাববার বিষয় হলো। সারা বিশ্বে এ পাখিটি নিয়ে অনেক কল্পকাহিনী রয়েছে। এমনকি এর বর্ণনা স্বয়ং কুরানেও রয়েছে। নিচে হুদহুদ পাখির কয়েকটি চিত্র তুলে ধরা হলো।
কাল্পনিকদর্শন (Mythosphilosophy) বা কাল্পনিকতত্ত্ব (Mythology)
1.Hoopoe in India 2.Hoopoe in Dubai park
…….. Hoopoe in India —————— Hoopoe in Dubai park
3.Hoopoe in Israel's 4.Hoopoe in Spain
……… Hoopoe in Israel’s —————— Hoopoe in Spain.
Hoopoe/ গরুড়/ ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ)
A bird with a fan shaped crest and a narrow, downward curved bill. Procne was turned into a swallow, Philomela into a nightingale, Itys into a pheasant, and Tereus into a hoopoe, a kind of vulture, some say an owl.
গরুড়/ Hoopoe (হুপী)/ ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ)
ঋষি কশ্যপ ও তাঁর স্ত্রী বিনতার পুত্র। পক্ষিবাজ ও বিষ্ণুর বাহন। কশ্যপ পত্নী বিনতা যে অ-দ্বয় প্রসব করেছিলেন, তার একটি অকালে ভগ্ন হওয়ায় নিম্নাঙ্গহীন অরুণের জন্ম হয়। অন্য ডিম্বটি অসময়ে ভগ্ন না হয়ে যথা সময়ে সন্তান জন্মগ্রহণের জন্য অপেক্ষরত থাকে। বহু শত বছর পরে উক্ত অ- হতে গরুড়ের জন্ম হয়। ইনি অর্ধ পক্ষি ও অর্ধ মানব। শ্বেতবর্ণ মুখ, রক্তবর্ণ পক্ষ ও স্বর্ণাভ দেহ। পক্ষির ন্যায় চঞ্চু ও নখর। এর পুত্রের নাম সম্পাতি।
নাগজননী কদ্রু তাঁর মাতা ও বিমাতাকে কপট উপায়ে দাসী করে রাখেন। গরুড় তাঁর মাতা ও বিমাতাকে তার নিকট থেকে উদ্ধার করতে তৎপর বলে গরুড় সর্পদের প্রধান শত্রু। মাতা ও বিমাতাকে কদ্রুর দাসীত্ব হতে মুক্ত করার নিমিত্তে গরুড় স্বর্গ হতে অমৃত আনায়নের জন্য গমন করেন। যাত্রাপথে অত্যন্ত ক্ষুধিত হয়ে পড়ায় পিতা কশ্যপের কাছে ভক্ষ্যদ্রব্য প্রার্থনা করেন। তখন পিতা দূরে এক জলাশয়ে যুদ্ধরত দুই ভ্রাতা বিভাবসু ও সুপ্রতীক- যারা পরস্পরের অভিশাপে গজকচ্ছপে পরিণত হয়েছিল, তাদের দেখিয়ে আহার করতে বলেন। পিতার আদেশে গরুড় দুই ভাইকে দুই নখে ধারণ করে এক বটবৃক্ষ শাখায় গিয়ে বসেন। এদের ভারে বটবৃক্ষের শাখা ভেঙ্গে যায়। উক্ত শাখায় তখন তপস্যারত আঙ্গুলিপ্রমাণ বালখিল্য ঋষিরা অধোমুখে লম্বমান ছিলেন। ভূমিতে পতিত হলে আহত ঋষিদের অভিশাপের ভয়ে গরুড় ওষ্ঠ দ্বারা শাখাটি ধারণ করে পিতা কশ্যপের নিকট উড়ে গিয়ে উপদেশ চান।
তখন কশ্যপের অনুরোধে বালখিল্য ঋষিরা উক্ত শাখা ত্যাগ করে অনত্র গমন করেন। কশ্যপের পরামর্শে এক নির্জন পর্বতে গরুড় সেই শাখা নিক্ষেপ করে। অন্য এক পর্বতশৃঙ্গে বসে গজকচ্ছকে ভক্ষণ করেন। আহারে তৃপ্ত হয়ে গরুড় যখন স্বর্গের দিকে অগ্রসর হন, তখন সশস্ত্র দেবগণ গরুড়কে বাধা দিতে আসেন। কিন্তু তাঁকে দেখে ভয়ে তারা পরস্পরকে অস্ত্রাঘাত করে বসেন।
অমৃতরক্ষক বিশ্বকর্মা গরুড়ের সঙ্গে যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ভূপাতিত হন। গরুড় দেবতাদের পরাজিত করে স্বর্ণময় ক্ষুদ্রদেহ ধারণ করে অমৃতের কক্ষে প্রবেশ করেন। সেখানে অমৃত অগ্নিবেষ্টিত হয়ে ছিল। তার নিকট একটি ঘূর্ণ্যমান ক্ষুরচক্র পথ রুদ্ধ করে ছিল। গরুড় সংকুচিত দেহে চক্রের অরের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন। অমৃত রক্ষার জন্য যে দুটি ভীষণ সর্প চক্রের নিচে ছিল তাদের বধ করে অমৃত নিয়ে আকাশপথে বিষ্ণুর সমীপস্থ হন। অমৃত পানের লোভে সংবরণ করায় বিষ্ণু প্রীত হয়ে গরুড়কে বর দিতে চাইলে গরুড় অমৃত পান না করেই অমরত্ব প্রার্থনা করেন। সাথে সাথে তিনি বিষ্ণুর রথের ওপরে অবস্থান করারও অভিলাষ জ্ঞাপন করেন। বিষ্ণু তথাস্ত বলায় গরুড়ও বিষ্ণুকে তাঁর নিকট বর প্রার্থনা করতে বলেন। বিষ্ণু তখন গরুড়কে তাঁর বাহন হতে ও তাঁর রথধ্বজে অধিষ্ঠান করতে বলেন। গরুড় তথাস্ত বলে প্রস্থান করেন।
তখন ইন্দ্র অমৃত কেড়ে নেওয়ার জন্য তাঁর প্রতি বজ্রাঘাত করেন। দধীচির অস্থি ও ইন্দ্রের সম্মানার্থ গরুড় একটি পালক মাত্র নিক্ষেপ করেন। তখন গরুড়ের সঙ্গে সখ্যতা স্থাপন করে ইন্দ্র অমৃত ফিরে চান। তখন গরুড় বলেন যে, বিশেষ কারণে তিনি অমৃত নিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে অমৃত রাখা হবে, ইন্দ্র ইচ্ছা করলে সেখান থেকে অপহরণ করতে পারেন। তখন ইন্দ্র তাঁকে বড় দিতে চাইলে গরুড় সর্পগণকে তাঁর ভক্ষরূপে প্রার্থনা করেন। অতঃপর গরুড় বিনতা ও সর্পদের কাছে অমৃত আনায়নের সংবাদ দিয়ে কুশের ওপর অমৃত স্থাপন করে সর্পদের স্নান করে আসতে বলেন। সাথে সাথে মাতার মুক্তি কামনা করেন। সর্পগণ বিনতাকে মুক্তি দিয়ে স্নান করতে গেলে ইন্দ্র অমৃত হরণ করেন। সর্পগণ ফিরে এসে অমৃত না পেয়ে কুশ লেহন করার ফলে তাদের জিহ্বা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায় (মহাভারত আদি)
একবার ইন্দ্র সারথি মাতলি তাঁর কন্যা গুণকেশীর সাথে নাগবংশীয় সুমুখের বিবাহ দিতে চান। কিন্তু সুমুখ একমাস পরে গরুড়ের ভক্ষা হবেন জেনে মাতলি সুমুখকে নিয়ে দেবরাজ ইন্দ্র ও বিষ্ণুর কাছে সমূহ ঘটনা ব্যক্ত করেন। বিষ্ণু সুমুখকে অমৃত পান করিয়ে অমরত্ব দান করার জন্য ইন্দ্রকে বলেন। ইন্দ্র সুমুখকে অমৃত না দিয়েই দীর্ঘায়ু দান করেন। এই সংবাদ পেয়ে গরুড় ইন্দ্রকে বলেন যে, তিনিই নাগদের ভক্ষণ করার বর দান করেন। কিন্তু এখন তার বাধা দান করছেন কেন? তখন ইন্দ্র বলেন যে, বিষ্ণুই সুমুখকে অভয় দিয়েছেন। গরুড় ক্রুদ্ধ হয়ে বিষ্ণুর কাছে আস্ফালন করেন যে, আমি আমার পক্ষের একাংশ দিয়েই তোমাকে ধারণ করি। বিষ্ণু তাঁর কাছে গরুড়কে অনর্থক আত্মশ্লাঘা প্রকাশ করতে নিষেধ করেন। এও প্রকাশ করেন যে, যদি গরুড় তাঁর বাম বাহুর ভার বহন করতে সক্ষম হন, তবেই তাঁর গর্ব সার্থক। এ বলে তাঁর বাম বাহু গরুড়ের ওপর রাখা মাত্রই গরুড় হতচেতন হয়ে ভূমিতে নিপতিত হলেন এবং বিষ্ণুর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। তখন পদাঙ্গুষ্ঠ দিয়ে বিষ্ণু সুমুখকে গরুড়ের বক্ষে নিক্ষেপ করেন। সে হতে গরুড় সুমুখকে হিংসা করা থেকে বিরত হন (মহাভারত- উদযোগপর্ব)
একবার রাম-লক্ষ্মণ ইন্দ্রজিৎ কর্তৃক নাগপাশে বদ্ধ হলে, গরুড় এসে এঁদের মুক্ত করেন। অন্যত্র লিখিত আছে যে, কশ্যপ পুত্রেচ্ছু হয়ে যজ্ঞ করতে আরম্ভ করেন। ইন্দ্র বালখিল্য মুনিগণ ও দেবতারা যজ্ঞের কাঠ আনবার জন্য নিযুক্ত হন। ইন্দ্র অনেক বড় বড় পর্বত প্রমাণ কাঠ আনতে আরম্ভ করেন। কিন্তু অঙ্গুষ্ঠপ্রমাণ বালখিল্যরা সবাই মিলিত হয়ে একটি পলাশপত্র বয়ে নিয়ে যান। এতে ইন্দ্র বালখিল্যদের উপহাস করেন। এর ফলে বালখিল্যরা অত্যন্ত অপমানিত ও রাগান্বিত হয়ে অন্য কোন দেবতাকে ইন্দ্রত্বে অধিষ্ঠিত করার জন্য সংকল্প করেন। ইন্দ্র ভীত হয়ে কশ্যপের শরণাপন্ন হন। তখন কশ্যপ বালখিল্যদের বলেন যে, ব্রহ্মার নির্দেশে ইনি ইন্দ্র হয়েছেন, আবার তোমরাও অন্য একজন ইন্দ্র চাও। ব্রহ্মার বাক্য অন্যথা হবার নয়, আবার তোমাদের সংকল্পও মিথ্যা হবার নয়। তাই তোমাদের ইন্দ্র পক্ষিদের ইন্দ্ররূপে জন্মগ্রহণ করবেন। এতে বালখিল্যরা রাজি হলেন। এ সময় দক্ষকন্যা বিনতা পুত্রলাভের জন্য নিজ স্বামীর কাছে এসে, কশ্যপ বলেন যে, তোমার ইচ্ছা পূর্ণ হবে। তুমি পৃথিবীশ্রেষ্ঠ দুই পুত্র প্রসব করবে। বালখিল্যদের তপস্যা ও আমার সংকল্পের ফলে এঁরা পক্ষিদের ইন্দ্র হবে। যথাকালে বিনতা অরুণ ও গরুড় নামে দুই পুত্র প্রসব করেন। অরুণ বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মগ্রহণ করে সূর্যদেবের কাছে যান এবং গরুড় পক্ষিদের ইন্দ্রত্বলাভ করেন।
গরুড় রূপক সাহিত্যের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। পিতা মাতার নাম থেকে গরুড়ের দুই নাম হচ্ছে কাশ্যপী ও বৈনতেয়। ইন্দ্রের বজ্রাঘাতে তিনি একটি সুন্দর পালক ফেলে দিয়েছিলেন বলে সুপর্ণ নামেও তিনি পরিচিত। এছাড়াও রক্তপক্ষ, সুবর্ণকায়, গগনেশ্বর, খগেশ্বর, খগরাজ, খগপতি, কামায়ুধ, বিষ্ণুরথ, সুধাহর, সুরেন্দ্রজিৎ (ইন্দ্রকে জয় করার জন্য), বজ্রজিৎ (ইন্দ্রের বজ্র ভগ্ন করার জন্য) প্রভৃতি নামেও গরুড় নামাঙ্কিত। (পৌরাণিক অভিধান)
কল্পিত গরুড় (Imaginary Hoopoe)
0.Gharura 1 0.Gharura 3
‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ)/ গরুড়/ Hoopoe (হুপী)
الهدهد: طائر مشهور بقنزعته المنتصبة , ذات اللون البندقي المحمر , والمنتهي ريشاتها بالسواد وبمنقاره المقوس , ريش الرأس والرقبة بندقي محمر , والرداء يميل إلى البني. الظهر والكتف والجناحان مقلمة بمناطق سوداء وعسليّة عريضة , العجز أبيض , والذنب أسود يقطعه من الوسط شريط أبيض عريض.
পবিত্র কুরানের একটি মাত্র স্থানে এই ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) বর্ণনা দেখতে পাওয়া যায়। যেমন- “وَتَفَقَّدَ الطَّيْرَ فَقَالَ مَا لِي لَا أَرَى الْهُدْهُدَ أَمْ كَانَ مِنْ الْغَائِبِينَ” “সুলায়মান পক্ষিদের সংবাদ নিলেন। অতঃপর বললেন কী হলো গরুড়কে দেখছি না কেন? নাকি সে অনুপস্থিত?” (Watafaqqada attayra faqalama liya la ara lhudhuda am kana minaalgha-ibeen) “And he reviewed the birds, then said: How is it I see not the hoopoe or is it that he is of the absentees?” (কুরান, সুরা নমল- ২০)
বাংভারতীয় কুরানী মনীষীরা ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) পাখিকে কাঠঠোকরা, কাঠুরে পাখি, ঝুঁটিযুক্ত পাখি বলে উল্লেখ করে থাকেন। কুরানী মনীষীরা আরো বলে থাকেন যে, এ পাখি কুরানোক্ত সুলাইমানের সাথে সাথে থাকত এবং জল বিষেশজ্ঞের কাজ করত। দূরদেশে ভ্রমণে গেলে এই পাখি জলের সন্ধান করত।
Hudhud 2 Hudhud 8
আত্মদর্শন (Theosophy) বা আত্মতত্ত্ব (Theology)
পাখি/ Hoopoe (হুপী)/ ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ)
এটি রূপক সাহিত্যের বৈক্তিকসদস্য সারণির ‘ভৃগু’ পরিবারের অন্যতম একটি ‘উপমান পরিভাষা’। এর প্রকৃতমূলক ‘জরায়ুমুখ’, রূপান্তরিতমূলক ‘ভৃগু’, রূপক পরিভাষা‘ত্রিবেণী’, অন্যান্য উপমান পরিভাষা ‘খিড়কি, পর্বত, সিঁধ, স্বর্গদ্বার ও স্বর্গমুখ’, চারিত্রিক পরিভাষা ‘অর্জুন, দ্বারী ও মহারাজ’ এবং ছদ্মনাম পরিভাষা ‘অসি ও পরশু’। এ পরিভাষাটি রূপক সাহিত্যের বৈক্তিকসদস্য সারণির ‘উপাসক’, ‘কানাই’, ‘পালনকর্তা’, ‘বিদ্যুৎ’, ‘ভৃগু’, ‘মন’, ‘শান্তি’ ও ‘শ্বাস’ ইত্যাদি মূলকের চারিত্রিক ও ছদ্মনাম পরিভাষা রূপে ব্যবহার হয়ে থাকে। এ জন্য বর্ণনার ক্ষেত্র অনুযায়ী এর সঠিকমূলক উদ্ঘাটন করা প্রত্যেক পাঠক-শ্রোতার একান্ত প্রয়োজন। যেসব মূলকের অধীনে পাখি পরিভাষাটি ব্যবহার হয়ে থাকে তাদের সারণি নিচে দেখানো হলো।
বাংলা - ইংরেজি- আরবি- মূলক
১.পাখি Bird (বার্ড) ‘ﻄﺎﺌﺮ’ (ত্বয়্যিরা) বিদ্যুৎ
২.পাখি Phoenix (ফোনিক্স) ‘عنقاء’ (আনক্বা) কানাই
৩.পাখি Hoopoe (হুপী) ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) ভৃগু
পাখি (রূপ)বি পক্ষী, বিহগ, বিহঙ্গম, Hoopoe (হুপী) ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) (আবি)বি ভৃগু, প্রপাত, জলপ্রপাত, নির্ঝরের পতনস্থান (সাঅ)বি ক্ষুর, তলোয়ার, পরশু (আভা)বি ভৃগুদেশ, ভৃগুমুণি, ভৃগুরাজ, ভৃগুপতি, স্বর্গদ্বার, অক্রুর, ত্রিকুট, ত্রিত, ত্রিনাথ, ত্রিপুর, ত্রিপাদ, ত্রিমূর্তি, ত্রিলোচন, ত্রিশংকু, ত্র্যম্বক, ধনঞ্জয়, নারদ, প্রসূতি, বজ্রপাণি, যক্ষ, সগর, সান্দীপনি, হিমবান, হিমালয়, হিরণ্যবর্মা, হিরণ্যরেতা, হৈহয় (ইদৈ) chopper, declivity, precipice, slope, plateau (আদৈ) আত্তার (.ﻋﻄﺎﺮ), আফলাত (ফা.ﺍﻔﻼﻄﻭﻦ), আযীয-মিসর (.ﻋﺯﻴﺯ ﻤﺼﺮ), ওহোদ (.ﺍﺤﺪ), কেল্লাদার (.ﻘﻟﻌﻪ ﺪﺍﺭ), কোহি (ফা.ﻜﻮﻩ), কোহিতুর (ফা.ﻛﻭﻩ ﻄﻭﺮ), ছেমহলা (ফা.ﺴﻪﻤﺤﻝ), জঙ্গিজ (তু.ﺟﻨﮕﻴﺯ), জল্লাদ (.ﺠﻼﺪ), জাঁহাবাজ (ফা.ﺠﺎﻧﺑﺎﺯ), জাসুস (.ﺠﺎﺴﻭﺱ), জুলকারনাইন (.ﺬﻮ ﺍﻟﻗﺭﻧﻴﻦ), নজাশি (.ﻨﺟﺎﺸﻰ), মিযান (.ﻤﻴﺯﺍﻦ), মুসা (.ﻤﻭﺴﻰٰ), মোক্তা (.ﻤﻗﻄﻊ), শাদ্দাদ (.ﺸﺪﺍﺪ), শাবান (.ﺷﻌﺒﺎﻦ), সিদরাতুল মুন্তাহা (.ﺴﺪﺭﺓ ﺍﻟﻤﻨﺗﻬﻰٰ), সেকান্দর (.ﺳﻛﻨﺩﺮ), হায়দার (.ﺤﻴﺪﺮ) (দেপ্র) এটি রূপক সাহিত্যের বৈক্তিকসদস্য সারণির ‘ভৃগু’ পরিবারের ‘উপমান পরিভাষা’ ও রূপক সাহিত্যের একটি পরিভাষা বিশেষ (সংজ্ঞা) ১.সাধারণত পক্ষি বা বিহঙ্গকেপাখি বলা হয় ২.রূপক সাহিত্যে জরায়ুমুখকে ভৃগু বা রূপকার্থে পাখি বলা হয় (ছনা)বি অসি ও পরশু (চরি)বি অর্জুন, দ্বারী ও মহারাজ (উপ)বি খিড়কি, পর্বত, পাখি, সিঁধ, স্বর্গদ্বার ও স্বর্গমুখ(রূ)বি ত্রিবেণী (দেত)বি ভৃগু।
পাখি বি খড়খড়ির কাষ্ঠদ-, চরকার খুরায় সংলগ্ন কাষ্ঠদণ্ডাবলী, মইয়ের খিল বা ধাপ।
পাখি বি ২৬/৩৩/৩৫ শতাংশ পরিমাণ ভূমি।
হুদহুদ [ﻫﺪﻫﺪ] (রূপ)বি ১.পাথর, Rock, কবিকল্পিত পাথর বিশেষ, স্বর্গীয় পাথর বিশেষ ২.কাঠঠোকরা, কাঠুরে পাখি, ঝুঁটিযুক্ত পাখি বিশেষ, Hoopoe (হুপী), উচ্চ রববিশিষ্ট পাখি বিশেষ- যে পাখি শক্ত গাছ ছিদ্র করে বাসা প্রস্তুত করে (প্র) কুরানোক্ত কবি কল্পিক ঝুঁটিযুক্ত এক প্রকার পক্ষী বিশেষ (আবি)বি গরুড়, ত্র্যম্বক, নারদ, স্বর্গদ্বার, স্বর্গমুখ, অন্তর্দ্বার, মুসা (.ﻤﻭﺴﻰٰ), chopper (দেপ্র) এটি রূপক সাহিত্যের বৈক্তিকসদস্য সারণির ‘ভৃগু’পরিবারের ‘উপমান পরিভাষা’ ও রূপক সাহিত্যের একটি পরিভাষা বিশেষ (সংজ্ঞা)১.সাধারণত সর্ব প্রকার পক্ষীকে পাখি বলা হয় ২.রূপক সাহিত্যে জরায়ুমুখকে ভৃগু বা রূপকার্থেপাখি বলা হয় (ছনা)বি অসি ও পরশু (চরি)বি অর্জুন, দ্বারী ও মহারাজ (উপ)বি খিড়কি, পর্বত, পাখি, সিঁধ, স্বর্গদ্বার ও স্বর্গমুখ (রূ)বি ত্রিবেণী (দেত)বি ভৃগু {}
পাখির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি
(Some highly important quotations of Hoopoe)
১. “কলের পাখি কলের ছোঁয়া, কলের মোহর গিরা দেওয়া, কল ছুটলে যাবে হাওয়া, কে রবে কোথায়” (পবিত্র লালন- ৩৫৬/৩)
২. “রাত পোহালে পাখি বলে, দেরে খাই দেরে খাই, তখন গুরুকার্য মাথায় থুয়ে, কী করি কোথায় যাই” (পবিত্র লালন- ৮৬৩/১)
৩. “তাদের প্রতি পক্ষিদল প্রেরিত হয়।” “وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ” (ওয়া আরসালা আলাইহিম ত্বইরান আবাবিল (Wa arsala alayhim tayran ababeel) “And sent against them phoenixs in flocks.” (কুরান- ফিল- ৩)
“রাত পোহালে পাখি বলে,
দেরে খাই দেরে খাই,
এখন গুরুকার্য মাথায় থুয়ে,
কী করি কোথায় যাই।
সদায় বল আত্মারাম,
মুখে লওরে কৃষ্ণনাম,
যাতে মুক্তি পাই,
সে নামে তো- হয় না রত,
খাব খাব রব সদায়।
এমন পাখি কেবা পোষে,
খেতে চায় সাগর চুষে,
কিরূপে জোগাই,
বুদ্ধি গেল- সাধ্যি গেল,
কী দিয়ে তার পেট ভরাই।
আমি লালন লালপড়া,
পাখি সেও নাছোড় ধড়া,
দের সবুরি নাই,
তাইত বলি- পেট ভরলে,
কী হয় আর গুরু গোঁসাই।” (পবিত্র লালন- ৮৬৩)
বিদ্যুৎ অর্থে ‘পাখি’ পরিভাষাটির ব্যবহার
(Using the terminology Hoopoe sense for electricity)
১. “কখন উড়াল দেয় পাখি, মুদে যায় ডাগর আঁখি, সোনার খাঁচা ভেঙ্গেচুরে, এ মহামায়ার জাল কাটি” (বলন তত্ত্বাবলী- ৫৯)
২. “কপালের ফের নইলে কী আর, পাখিটির এমন ব্যবহার, খাঁচা খুলে পাখি আমার, কোন্ বনে পালায়” (পবিত্র লালন- ৩৭৫/৩)
৩. “কী এক অচিনপাখি, পুষলাম খাঁচায়, না হলো জনম জনম, তার পরিচয়” (পবিত্র লালন- ৩০১/১)
৪. “চিরদিন পোষলাম এক অচিনপাখি, ভেদ পরিচয় দেয় না আমায় ঐ খেদে ঝরে আঁখি”(পবিত্র লালন- ৪৪৯/১)
৫. “থাক সে ভবের ভাই বেরাদর, প্রাণপাখি ও নয় আপনার, পরের মজায় মজে এবার, প্রাপ্তধন হারায় পাছে” (পবিত্র লালন- ৭৪৩/২)
৬. “দুঃখে দুঃখে গেল জীবন, শ্যাম বিনে কেউ নাইরে আপন, লালন বলে মনরে কখন, উড়ে যায় খাঁচার পাখি” (পবিত্র লালন- ৫৮২/৪)
৭. “বিদ্যা-বুদ্ধি শূন্য এ ধড়, পরানপাখি করে ধড়ফড়, ভাবিয়া কয় বলন ত্রিগড়, স্বস্তি পাবো মরিলে” (বলন তত্ত্বাবলী)
৮. “মায়াডুরি বান্ধিস না, খাঁচায় পাখি রবে না” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৫৭)
৯. “মিছে কড়ির বাহাদুরী, যত করবি ছল চাতুরি, একদিন এ বিশ্ব ছাড়ি, পরানপাখি যায় উড়ি”(বলন তত্ত্বাবলী- ১৭৭)
১০. “যেদিন বাতি নিভে যাবে, ভাবেরশহর আঁধার হবে, শুকপাখি সে পালাবে, ছেড়ে সুখ আলয়” (পবিত্র লালন- ৭২১/৩)
১১. “শুদ্ধ মনে সকলই হয়, তাও তো জুটল না হেথায়, লালন বলে করবি হায় হায়, ছেড়ে গেলে প্রাণপাখি” (পবিত্র লালন- ৬৩/৪)
১২. “সবে বলে প্রাণপাখি, শুনে চুপে চুপে থাকি, জল কী হুতাসন- ক্ষিতি কী পবন, আমি ধরতে গেলে পাইনে তারে” (পবিত্র লালন- ১২৩/৩)
১. “চিরদিন পোষলাম এক অচিনপাখি
ভেদ পরিচয় দেয় না আমায়
ঐ খেদে ঝরে আঁখি।
পাখি বুলি বলে শুনতে পাই,
রূপ কেমন দেখি না ভাই,
আমি উপায় কী করি,
চিনাল পেলে চিনে নিতাম,
যেত মনের ধুকধুকি।
আমি পুষে পাখি চিনলাম না, 
এ লজ্জা তো যাবে না,
আমি বিষম ঘোর দেখি,
কোন দিন পাখি যাবে উড়ে,
ধূলো দিয়ে দুই চোখি।
নয় দুয়ার এ খাঁচাতে,
যায় আসে পাখি কোন পথে,
চোখে দিয়ে ভেল্কি,
সিরাজ সাঁইজি কয় বয় লালন রয়,
ফাঁদ পেতে ঐ সম্মুখী।” (পবিত্র লালন- ৪৪৯)
২. “পাখি কখন যেন উড়ে যায়,
বদ হাওয়া লেগে খাঁচায়।
খাঁচার আড়া পড়ল ধ্বসে,
পাখি আর দাঁড়াবে কিসে,
এখন আমি ভাবছি বসে,
সদা চমকজ্বরা বইছে গায়।
কারবা খাঁচায় কেবা পাখি, 
কার জন্যে কার ঝরে আঁখি,
(পাখি) আমারি আঙ্গিনায় থাকি,
আমারে মজাতে চায়।
শুকপাখি যাবে উড়ে,
খালি খাঁচা রবে পড়ে,
সঙ্গের সাথী কেউ না রবে,
লালন ফকির কেঁদে কয়।” (পবিত্র লালন- ৬১৯)
সাধারণ পাখি অর্থে ‘পাখি’ পরিভাষাটির ব্যবহার
(Using the terminology Hoopoe sense for Bird)
১. “ব্যাধ নলেতে পাখি ধরেরে, তেমনি মতো ধরতে হয়রে, তেমনি অনুরাগের আঠা, লাগাও গুরুর রাঙাপায়” (পবিত্র লালন- ৮৬১/২)
২. “ব্যাধে যখন পাখি ধরতে যায়, তখন ঊর্ধ্বমুখে রয়, থাকে এক নিরীক্ষে পাখির দিকে, ফিরে থাকায় না, তুমি আঁখি রেখ পাখির দিকে, নয়নে পলক দিও না” (পবিত্র লালন- ৩৯০/২)
উপাসক অর্থে ‘পাখি’ পরিভাষাটির ব্যবহার
(Using the terminology Hoopoe sense for Admirer)
১. “চাতক পাখির এমনি ধারা, অন্য বারি খায় না তারা, প্রাণ থাকতে জ্যান্তমরা, ঐরূপ ডালে বসে ডাক” (পবিত্র লালন- ৯৭৩/৩)
২. “চাতকরূপ পাখি যেমন, করে সে প্রেম নিরূপণ, আছি তেমন প্রায়- কারে বা শুধাই, সে চাঁদের উদ্দেশ কে কয়” (পবিত্র লালন- ১৬৮/২)
পালনর্কতা অর্থে ‘পাখি’ পরিভাষাটির ব্যবহার
(Using the terminology Hoopoe sense for Guardian)
১. “আঁখির কোনায় পাখির বাসা, দেখতে নারি সে তামাসা, এ বড় আদলা দশা, কে আর ঘুচায়”(পবিত্র লালন- ৩০১/৩)
২. “আব খাকে পিঞ্জিরা বর্ত্ম, আতশে হলো পোক্ত, পবন আড়া সে ঘরে, আছে শুকপাখিসেথায়, প্রেমশিকল পায়, আজব খেলা খেলছে গুরু গোঁসাই মেরে” (পবিত্র লালন- ১২১/২)
৩. “আবে খাকে গঠল পিঞ্জিরে, শুকপাখি আমার কিসে গঠেছেরে, পাখি পুষলাম চিরকাল, নীল কিংবা লাল, একদিন না দেখলাম সেরূপ সামনে ধরে” (পবিত্র লালন- ১২১/১)
৪. “কতো করি পাখির যতন, হলো না সে মনের মতন, উড়াল দিয়ে যাবে যখন, কী হবে কান্নাকাটি” (বলন তত্ত্বাবলী- ৫৯)
৫. “করে আজব কারিগরি, বসে আছে ভান মিশ্রী, সে পিঞ্জিরার বাইরে, পাখির যাওয়া আসার দ্বার, আছে শূন্যের ’পর, লালন বলে কেউ কেউ জানতে পারে” (পবিত্র লালন- ১২১/৪)
৬. “দশডালেতে চৌদ্দশাখা, মগডালে পাখির বাসা, মাসেতে ফুটে দুইটি ছা, কথা কয় হাজার মাসে” (বলন তত্ত্বাবলী- ২০৮)
৭. “দুই পায়ে চলে পাখি, জগতে নাই তাকিয়ে দেখি, সে পাখির ফাঁকিফুকি, বুঝবি কিসে তোরা” (পবিত্র লালন- ৪৫৭/৪)
৮. “পাখি রাম রহিম বুলি বলে, করে সে অনন্তলীলে, বলো তারে কী চিনলে, বলো গো নিশ্চয়” (পবিত্র লালন- ৩০১/২)
৯. “পানিকাউড় দয়ালপাখি, রাতদিন তারে জলে দেখি, হাবুডুবু করে মরল তবুও কাদা গায়ে মাখল না, আমার চিন্তাজ্বর তো গেল না গুরু উপায় বলো না” (পবিত্র লালন- ৬২০/১)
১০. “বন্ধ ছন্দ করিরে এঁটে, ফস্ করে যায় সকলি কেটে, অমনি সে গর্জিয়ে উঠে, শুকপাখিরেহানা দেয়” (পবিত্র লালন- ১১০/২)
১১. “যখন মন ভবে এলি, জমা খরচ সব নিয়ে এলি, এবার লাভে মূলে সব খুয়ালি, কৈ রইল পিঞ্জিরার পাখি” (পবিত্র লালন- ৬৬৩/২)
“দেখ না এবার আপনার, ঘর ঠাওরিয়ে,
আঁখির কোনায় পাখির বাসা,
যায় আসে হাতের কাছ দিয়ে।
সবেতে পাখি একটা, 
হাজার কুঠরি কোঠা,
আছে আড়া পাতিয়ে,
নিগুমে তার- মূল একটি ঘর,
সেথা রয় অচিন হয়ে।
ঘরের আয়না আঁটা চৌপাশে,
মাঝখানে পাখি বসে,
আনন্দিত হয়ে,
দেখনারে ভাই- ধরার জো নাই,
সামান্য হাত বাড়িয়ে।
কেউ দেখতে যদি সাধ করো,
সন্ধানী চিনে ধর,
দিবে দেখিয়ে,
সিরাজ সাঁইজি কয়- লালন তোমায়
বুঝাতে দিন যায় বয়ে।” (পবিত্র লালন- ৫৩৫)
মন অর্থে ‘পাখি’ পরিভাষাটির ব্যবহার
(Using the terminology Hoopoe sense for psyche)
১. “মনপাখি তুই আর কতকাল থাকবি খাঁচাতে” (জনৈক গীতিকার)
২. “সাঁই নাম বলরে আমার মনপাখি, ভবে কেউ কারো নয়রে দুঃখের দুঃখী” (পবিত্র লালন- ৯৩৪/১)
শান্তি অর্থে ‘পাখি’ পরিভাষাটির ব্যবহার
(Using the terminology Hoopoe sense for peace)
“ভেঙ্গে গেল যৌবনের ডাল, সুখপাখিটা দিলো উলাড়, জনমদুঃখী নিঃস্ব কাঙাল, আমায় করে রাখিলে।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
শ্বাস অর্থে ‘পাখি’ পরিভাষাটির ব্যবহার
(Using the terminology Hoopoe sense for breath)
“খাঁচার ভিতর অচিনপাখি, কেমনে আসে যায়, তারে ধরতে পারলে মনোবেড়ি, দিতাম তার পায়” (পবিত্র লালন- ৩৭৫/১)
বিমান অর্থে ‘পাখি’ পরিভাষাটির ব্যবহার
(Using the terminology Hoopoe sense for aeroplane)
“ফাল্গুন মাসের তিনতারিখ শনিবার যেদিন, ধাতবপাখি হানবে আঘাত করিবে জনহীন, পাতালভেদী কত মানুষ- কর্মদায় রবে বেহুঁশ, কাঁধে লয়ে আপনার দোষ পূর্বেতে করবে ধিয়ান”(বলন তত্ত্বাবলী- ৪৭)
পাখির সংজ্ঞা (Definition of Hoopoe)
সাধারণত সর্ব প্রকার পক্ষীকে পাখি বলে।
পাখির আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theosophical definition of Hoopoe)
রূপক সাহিত্যে জরায়ুমুখকে ভৃগু বা রূপকার্থে পাখি বলে।
পাখির প্রকারভেদ (Classification of Hoopoe)
পাখি দুই প্রকার। যথা- ১.উপমান পাখি ও ২.উপমিত পাখি।
১. উপমান পাখি (Analogical Hoopoe)
সাধারণত সর্ব প্রকার পক্ষীকে উপমান পাখি বলে।
২. উপমিত পাখি (Compared Hoopoe)
রূপক সাহিত্যে জরায়ুমুখকে ভৃগু বা উপমিত পাখি বলে।
পাখির পরিচয় (Identity of Hoopoe)
এটি রূপক সাহিত্যের বৈক্তিকসদস্য সারণির ‘ভৃগু’ পরিবারের অধীন একটি ‘উপমান পরিভাষা’। সারাবিশ্বের সর্ব প্রকার শাস্ত্রীয় ও পারম্পরিক গ্রন্থ-গ্রন্থিকায় এর ন্যূনাধিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে এ পরিভাষাটি একেক গ্রন্থে একেক ভাষায় একেক পরিভাষায় ব্যবহার হওয়ার কারণে সাধারণ পাঠক-পাঠিকা ও শ্রোতাদের তেমন দৃষ্টিগোচর হয় না।
বাংলা রূপক সাহিত্যের বৈক্তিকসদস্য সারণির ‘উপাসক’, ‘কানাই’, ‘পালনকর্তা’, ‘বিদ্যুৎ’, ‘মন’, ‘শান্তি’ ও ‘শ্বাস’ ইত্যাদি মূলকের চারিত্রিক ও ছদ্মনাম পরিভাষা রূপে এ পরিভাষাটির ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা গেলেও ‘ভৃগু’ অর্থে এর তেমন ব্যবহার দেখা যায় না। তবে অন্যান্য ভাষার রূপক সাহিত্যে এর অনেক ব্যবহার দেখা যায়। পুরাণে একে গরুড় বলা হয়েছে। অন্যদিকে কুরানে একে ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতঃপর ‘ﻤﻭﺴﻰٰ’ (মুসা) ও ‘ﺴﻟﻴﻤﺎﻦ’ (সোলাইমান) এর সাথে এর অনেক কল্পকাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
আমাদের আলোচ্য এ পাখিটি বাস্তব কোন পাখি নয়। বরং এটি হচ্ছে ‘জরায়ুমুখ’। জরায়ুমুখ লজ্জাস্কর বা বিব্রতকর পরিভাষা। সে জন্য এর রূপক ও ব্যাপক পরিভাষা সৃষ্টি করে একে রূপান্তর করা হয়েছে। এর রূপান্তরিত পরিভাষা হচ্ছে ‘ভৃগু’। রূপক সাহিত্যে জরায়ুমুখকে ভৃগু বলা হয়। এ ভৃগুর উপমান পরিভাষা হচ্ছে গরুড়, ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) ও Hoopoe। অর্থাৎ একে সংস্কৃত ভাষায় গরুড়, ইংরেজি ভাষায় Hoopoe (হুপী) এবং আরবি ভাষায় ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) বলা হয়। ভগ, বৈতরণী, ভৃগু ও জরায়ুর আলোচনা সারা বিশ্বের সর্ব প্রকার শাস্ত্রীয় গ্রন্থ-গ্রন্থিকায় রূপক আকারে সর্বাধিক। ইংরেজি ভাষায় এদেরকে Vulva, Vagina, Cervix & Uterus বলা হয়।
Cervix 1 Cervix 2
Cervix 3
বড় হাস্যকর বিষয় হলো গড়ুর, Hoopoe (হুপী) বা ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) যে বাস্তব কোন পাখি নয় তা শাস্ত্রীয়রা জানেই না। আরো হাস্যকর বিষয় হচ্ছে সারাবিশ্বের সর্ব প্রকার শাস্ত্রীয়, সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পণ্ডিত, বক্তা, বৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবেত্তা ও অনুবাদকরা রূপক সাহিত্যে বর্ণিত ‘পাখি’ পরিভাষাটির দ্বারা কেবল পক্ষিকেই বুঝেন ও বুঝিয়ে থাকেন। তাই শাস্ত্রীয় ও সাম্প্রদায়িকরা চিরদিনের জন্য আধ্যাত্মিকজ্ বা আত্মতত্ত্বের জ্ঞানে চির অন্ধ। রূপক সাহিত্যে বর্ণিত কোন্ পাখির প্রকৃত অভিধা যে কী তা তারা যেমন জানে না তাদৃশ অন্যান্য পরিভাষার ক্ষেত্রেও। শাস্ত্রীয় গ্রন্থ বা স্বস্ব রূপক সাহিত্যে ব্যবহৃত পরিভাষাদির অভিধা না জানা না ও না বুঝার জন্যই শাস্ত্রীয়দের মধ্যে থেকে প্রায়ই উগ্রবাদী ও শাস্ত্রীয় সন্ত্রাসবাদী দলের উদ্ভব হয়ে থাকে।
হুদহুদ এর অন্যান্য রূপক পরিভাষাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
ভৃগু Cervix (সাভেক্স) ‘دش’ (দাশশা)
জরায়ুমুখ Uterus mouth ‘الفم الرحم’ (আলফামুর রেহেম)
ত্রিবেণী Triad (ট্রাইয়ার্ড) ‘ثالوثا’ (সালুসা)
খিড়কি Postern (পোস্টার্ন) ‘باب خلفي’ (বিয়াব খিলফিয়া)
পর্বত Hill (হিল) ‘تل’ (তাল)
পাখি Hoopoe (হুপি) ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ)
সিঁধ Burgle (বার্গেল) ‘سطو’ (সাতুউ)
স্বর্গদ্বার Heaven’s gate ‘بوابة السماء’(বিওয়াবাত আসসামা)
স্বর্গমুখ Zion mouth ‘الفم صهيون’ (আলফামুন সহিউন)
অর্জুন Razor (রেজার) ‘ﻤﻭﺴﻰٰ’ (মুসা)
দ্বারী Janitor (জ্যানিটর) ‘بواب’ (বাওয়াব)
মহারাজ Abbot (এ্যাবোট) ‘أبوت’ (আবুত)
অসি Sword ( সোর্ড) ‘ﺴﻴﻒ’ (সাইফ)
পরশু Axe (এক্স) ‘الفأس’ (আলফায়াস)
এবার আমরা বলতে পারি ঘূর্ণিঝড়টির ‘ﻫﺪﻫﺪ’ (হুদহুদ) নামকরণ করা যথার্থ ও যুক্তিযুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ জরায়ুমুখ হতে ভৃগু, ভৃগু হতে গরুড়, গরুড় হতে Hoopoe, Hoopoe হতে হুদহুদ এবং হুদহুদ হতে ‘ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ’ হয়েছে (Cyclone from Hudhud, Hudhud from Hoopoe, Hoopoe from Garuda, Garuda from Cervix, Cervix from Uterus mouth)। এ পাখি শক্ত কাঠকে যেভাবে ক্ষতবিক্ষত করে। ভৃগুও তদ্রূপ শিশ্নকে ক্ষতবিক্ষত করে শুক্র ছিনিয়ে নেই। তাই রূপক সাহিত্যে দেহের এ সত্তাকে কাঠঠোকরা পাখি বলা হয়।
(সংক্ষিপ্ত সংকলন)
সূত্রতথ্যঃ
আত্মতত্ত্ব ভেদ (৬ষ্ঠ খণ্ড)
লেখকঃ বলন কাঁইজি


প্রথম আলোর হুদহুদ সম্বন্ধে ধারণা

পাখি

চোখজুড়ানো হুদহুদ

প্রথম আলো ডেস্ক | আপডেট: প্রিন্ট সংস্করণ
Like
বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে কালেভদ্রে দেখা মেলে হুদহুদ পাখির। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের ফুলবাগান থেকে সম্প্রতি ছবিটি তুলেছেন নীরব চৌধুরীপাখিটিকে একবার দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। মনটা অন্য রকম এক ভালো লাগার আবেশে ভরে যায়। অনন্যসুন্দর সেই পাখিটির নাম হুদহুদ। মূলত আফ্রো-ইউরেশিয়া অঞ্চলের হুপো নামে একটি পাখির নামানুসারে এই পাখিটির নামকরণ করা হয়েছে। পাখিটির শরীর বাদামি এবং ডানা ও লেজে সাদা-কালো দাগ রয়েছে। মাথায় সুন্দর একটি ঝুঁটি। সেই ঝুঁটির হলদে বাদামি পালকের মাথাটা কালো রঙের।
হুদহুদ পাখিইতিহাসের পাতায় স্থান পাওয়া পাখি হুদহুদ ২৫-৩২ সেন্টিমিটার (৯.৮-১২.৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। পাখা দুটি ছড়িয়ে দিলে তা ৪৪-৪৮ সেন্টিমিটার (১৭-১৯ ইঞ্চি) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ওজন ৪৬-৮৯ গ্রাম পর্যন্ত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Upupa epops আর ইংরেজি নাম Common Hoopoe/ Eurasian Hoopoe। 
সাধারণত এই উপমহাদেশে পাখিটি বেশি দেখা যায়। আমাদের দেশে পাখিটি ‘মোহনচূড়া’ বা ‘হুপো’ নামে পরিচিত। ডাকে উপ..উপ...উপ আওয়াজ করে। 
উপুপিড়ি গোষ্ঠীর একমাত্র প্রতিনিধি এই হুদহুদ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে বেশ পরিচিত। পাখিটি শুধু ওমান নয়, মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশ এবং আফ্রিকার মিসর, চাদ, মাদাগাস্কার, এমনকি ইউরোপের কয়েকটি দেশ, এশিয়ার ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশেও অতিপরিচিত। দেশভেদে কেবল নামকরণেই কিছুটা পার্থক্য। ইংরেজিতে একে হুপো বা হুপি বলে ডাকা হয়। আরবির মতো উর্দুতেও একে হুদহুদ নামে ডাকা হয়। মূলত ইউরেশিয়া এলাকার এই পাখিটি ‘ওল্ড ওয়ার্ল্ড বার্ড’ বলে পরিচিত। সাধারণত মরুভূমিসংলগ্ন এলাকায় থাকতে অত্যন্ত ভালোবাসে। মাটিতে ঠোঁট ঢুকিয়ে পোকা খেয়ে জীবনধারণ করে। 
বলা হয়ে থাকে, হুদহুদ পাখির পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা অসাধারণ। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাখিটি কিন্তু তাকে শিকারের জন্য পেতে রাখা ফাঁদ দেখতে পায় না। অর্থাৎ দূরের কোনো বস্তু তার কাছে স্পষ্ট হলেও তার প্রাণঘাতী ফাঁদটি সে স্পষ্টভাবে দেখতে বা বুঝতে পারে না।
ভারতের ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশে এখন চলছে ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ আতঙ্ক। সেই সুবাদে নামটি এখন লোকজনের মুখে মুখে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের সুপারিশে ঘূর্ণিঝড়টির নাম রাখা হয় হুদহুদ। অথচ এই নামের পাখিটি দেখতে সুন্দর, পরিচিত ও বেশ উপকারী। এমনকি আমাদের দেশেও এই পাখিটি অপরিচিত নয়। একে ভারত মহাসাগরের উত্তর দিকে অবস্থিত আটটি দেশ পর্যায়ক্রমে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে। সেই মতো এবার ওমান তাদের অতিপরিচিত এই পাখির নামেই ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করেছে। ফলে চোখজুড়ানো ও নিরীহ পাখিটিকেই মানুষ এখন মূর্তিমান আতঙ্ক মনে করছে। সূত্র: বিবিসি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন