ওবামা প্রশাসনের চূড়ান্ত সম্মতি নিতে টিকফার খসড়া মার্কিন বাণিজ্য দফতরে (ইউএসটিআর) পাঠিয়েছে ঢাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চুক্তির খসড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কূটনৈতিক চ্যানেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা ইউএসটিআর কার্যালয়ে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কোনো আপত্তি না থাকলে খুব শিগগিরই বহুল আলোচিত চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার ব্যাপারে সম্প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনাও।
এদিকে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিম্যান্ট (টিকফা) চুক্তির বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে। অবশ্য গত ১৮ মে চুক্তিটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছিল। এর বাংলা কপি যুগান্তরের হাতে পৌঁছেছে। যদিও টিকফা চুক্তির ভেতর কী রয়েছে তা সরকার এখনও প্রকাশ করেনি। চুক্তিটি উš§ুক্ত না করার ব্যাপারে সরকারের ভেতরে রয়েছে কঠোর গোপনীয়তা। গত মাসে কঠোর গোপনীয়তার মাধ্যমে এ চুক্তি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে অনুমোদনের পর খসড়াটি গোপনীয়তার মাধ্যমে মার্কিন বাণিজ্য দফতরে পাঠানো হয়। চুক্তির ভেতরে কী আছে তা চুক্তিতে উভয় দেশ স্বাক্ষর না করা পর্যন্ত উš§ুক্ত করার ক্ষেত্রে এক ধরনের কড়াকড়ি বিধি আরোপ করা হয় বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর। চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমরা চুক্তির খসড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। কূটনৈতিক চ্যানেলে তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাঠানো হয়েছে। এরপর আর কোনো অগ্রগতি আমার জানা নেই।
টিকফা চুক্তিতে যা আছে : জানা গেছে, অনুমদিত টিকফার খসড়ায় ১৬টি অনুচ্ছেদ সংবলিত একটি প্রস্তাবনা এবং সাতটি আর্টিকেল রয়েছে। চুক্তিটি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ওয়াশিংটন স্বাক্ষর করবে। এ জন্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চুক্তিটি বাংলা করা হয়। তা হুবহু তুলে ধরা হল।
আর্টিকেল-এক : উভয় দেশে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি এবং পণ্য ও সেবা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণে এ চুক্তি।
আর্টিকেল-দুই : এ চুক্তির ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ (ইউএসটিআর) অফিস সভাপতিত্ব করবে। পরিস্থিতি প্রয়োজনে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা গ্রহণ করতে পারবে।
আর্টিকেল-তিন : বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য উভয় দেশ কমপক্ষে বছরে একবার বৈঠক করবে। ফোরাম বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক পরিবীক্ষণ করবে এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ শনাক্ত করবে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট সুনির্দিষ্ট বিষয়াদি বিবেচনায় আনতে হবে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে দূর করার জন্য কাজ করবে। ফোরামের কাজ সম্পর্কে বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের পরামর্শ গ্রহণ করবে।
আর্টিকেল-চার : যে কোনো পক্ষ অন্য পক্ষকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লিখিত অনুরোধপত্রের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে উপস্থাপন করতে পারবে। এরপর ফোরাম দ্রুত বিবেচনায় আনবে। কোনো বিষয়ে অন্য পক্ষের বাণিজ্য বা বিনিয়োগ স্বার্থকে বিরূপভাবে প্রভাবিত হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হলে বিষয়টির ওপর ব্যবস্থা গ্রহণের আগে তা বিবেচনার জন্য ফোরামকে সুযোগদানে সচেষ্ট হবে।
আর্টিকেল-পাঁচ: চুক্তিতে আরও বলা হয়, কোনো পক্ষের রাষ্ট্রীয় আইন কিংবা অন্য কোনো পক্ষের অধিকার, দায়বদ্ধতা ও সুবিধা ক্ষুণœ করবে না।
আর্টিকেল-ছয় : তবে কোনো পক্ষ লিখিত নোটিশ দিয়ে এ চুক্তির অবসান করতে পারবে। উভয় পক্ষ বাতিলের ব্যাপারে সম্মত হতে না পারলে নোটিশ প্রদানের ১৮০ দিন পর চুক্তিটির অবসান হবে। জানা গেছে, এ চুক্তি দেরি করার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। গত বছর মে মাসে মার্কিন রাষ্ট্রদূত চারটি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে টিকফা চুক্তি বিলম্বিত হওয়ার। সাতটি আর্টিকেল ছাড়াও চুক্তিতে ১৬টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এসব অনুচ্ছেদে অর্থনৈতিক উন্নয়নে শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা, ডব্লিউটিও দুর্নীতিবিরোধী চুক্তি অনুযায়ী স্বচ্ছতা আরও বৃৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হল।
প্রথম অনুচ্ছেদ : এ চুক্তিতে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন ও সহযোগিতার মনোভাব দৃঢ় এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার হবে।
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ : বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে উš§ুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
তৃতীয় অনুচ্ছেদ : বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে উভয় পক্ষ উপকৃত হতে পারে এবং বাণিজ্য বিঘœকারী, বিনিয়োগ কার্যক্রম, বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ও সংরক্ষণমূলক বাণিজ্য ব্যবস্থা ওই উপকারকে সংকুচিত করতে পারে।
চতুর্থ অনুচ্ছেদ : উভয় পক্ষ জাতি সংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশন অনুযায়ী স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত স্বচ্ছতা পালন করতে হবে।
পঞ্চম অনুচ্ছেদ : প্রবৃদ্ধি অর্জন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, বাণিজ্য সম্প্রসারণে, প্রযুক্তি বিকাশে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশী ও বিদেশী উভয় ধরনের বেসরকারি বিনিয়োগে অপরিহার্য ভূমিকা রাখবে।
ষষ্ঠ অনুচ্ছেদ : উভয় দেশের অর্থনীতিতে সেবা সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
সপ্তম অনুচ্ছেদ : বাণিজ্য বৃদ্ধির সুবিধার্থে শুল্ক বহির্ভূত প্রতিবন্ধকতা কমানো হবে।
অষ্টম অনুচ্ছেদ : বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রিপস চুক্তি, বার্ন কনভেনশন, মেধা সম্পদ সংরক্ষণ সংক্রান্ত অন্য যে কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তির বিধানগুলো পক্ষদ্বয়ের জন্য যেভাবে প্রযোজ্য সেভাবে অনুসরণ করে পর্যাপ্ত ও সঠিকভাবে মেধা সম্পদ সংরক্ষণ ও অধিকার বহাল থাকবে।
নবম অনুচ্ছেদ : শ্রম অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ডিকলারেশন অন ফান্ডামেন্টাল প্রিন্সিপাল অ্যান্ড রাইটস এট ওয়ার্ক অ্যান্ড ফলোআপের (১৯৯৮) বিধি-বিধান অনুসরণ করবে। এসব ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধন ও বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিজ নিজ শ্রম আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করবে।
দশম অনুচ্ছেদ : পরিবেশ আইন অনুসরণে পরিবেশ সুরক্ষা ও সংরক্ষণের গুরুত্ব রয়েছে। টেকসই উন্নয়নের অধিকতর বিকাশের ক্ষেত্রে বাণিজ্য ও পরিবেশ সংক্রান্ত নীতিগুলো পরস্পর সহায়ক করবে।
১১তম অনুচ্ছেদ : এক পক্ষ অন্যপক্ষের ভূখণ্ডের শিল্পোদ্যোগ, অন্যান্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগকে উৎসাহিত ও ত্বরান্বিত করবে।
১২তম অনুচ্ছেদ : দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়াবলির যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করা যাবে বলে বিবেচনা করতে হবে।
১৩তম অনুচ্ছেদ : ডব্লিউটিও চুক্তি ঠিক রেখে পরস্পর সুবিধাজনক চুক্তির মাধ্যমে ডব্লিউটিও নিয়ম মতে, বহু পাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করা হবে।
১৪তম অনুচ্ছেদ : এ চুক্তি ডব্লিউটিও সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, ডব্লিউটিও আওতায় সম্পন্ন চুক্তি, সমঝোতা এবং অন্যান্য দলিলে দেয়া অধিকার ও দায়বদ্ধ কোনো ক্রমে ক্ষুণœ হবে না।
১৫তম অনুচ্ছেদ : এ চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় পুঁজি বিনিয়োগ চুক্তির অধিকার ও দায়কে ক্ষুণœ করবে না।
১৬তম অনুচ্ছেদ : আরও সহযোগিতা ও বিশদ চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য এ চুক্তি অধিক আলোচনার একটি ফলপ্রসূ ব্যবস্থা সৃষ্টি করবে।
এদিকে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিম্যান্ট (টিকফা) চুক্তির বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে। অবশ্য গত ১৮ মে চুক্তিটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছিল। এর বাংলা কপি যুগান্তরের হাতে পৌঁছেছে। যদিও টিকফা চুক্তির ভেতর কী রয়েছে তা সরকার এখনও প্রকাশ করেনি। চুক্তিটি উš§ুক্ত না করার ব্যাপারে সরকারের ভেতরে রয়েছে কঠোর গোপনীয়তা। গত মাসে কঠোর গোপনীয়তার মাধ্যমে এ চুক্তি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে অনুমোদনের পর খসড়াটি গোপনীয়তার মাধ্যমে মার্কিন বাণিজ্য দফতরে পাঠানো হয়। চুক্তির ভেতরে কী আছে তা চুক্তিতে উভয় দেশ স্বাক্ষর না করা পর্যন্ত উš§ুক্ত করার ক্ষেত্রে এক ধরনের কড়াকড়ি বিধি আরোপ করা হয় বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর। চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমরা চুক্তির খসড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। কূটনৈতিক চ্যানেলে তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাঠানো হয়েছে। এরপর আর কোনো অগ্রগতি আমার জানা নেই।
টিকফা চুক্তিতে যা আছে : জানা গেছে, অনুমদিত টিকফার খসড়ায় ১৬টি অনুচ্ছেদ সংবলিত একটি প্রস্তাবনা এবং সাতটি আর্টিকেল রয়েছে। চুক্তিটি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ওয়াশিংটন স্বাক্ষর করবে। এ জন্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চুক্তিটি বাংলা করা হয়। তা হুবহু তুলে ধরা হল।
আর্টিকেল-এক : উভয় দেশে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি এবং পণ্য ও সেবা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণে এ চুক্তি।
আর্টিকেল-দুই : এ চুক্তির ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ (ইউএসটিআর) অফিস সভাপতিত্ব করবে। পরিস্থিতি প্রয়োজনে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা গ্রহণ করতে পারবে।
আর্টিকেল-তিন : বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য উভয় দেশ কমপক্ষে বছরে একবার বৈঠক করবে। ফোরাম বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক পরিবীক্ষণ করবে এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ শনাক্ত করবে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট সুনির্দিষ্ট বিষয়াদি বিবেচনায় আনতে হবে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে দূর করার জন্য কাজ করবে। ফোরামের কাজ সম্পর্কে বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের পরামর্শ গ্রহণ করবে।
আর্টিকেল-চার : যে কোনো পক্ষ অন্য পক্ষকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লিখিত অনুরোধপত্রের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে উপস্থাপন করতে পারবে। এরপর ফোরাম দ্রুত বিবেচনায় আনবে। কোনো বিষয়ে অন্য পক্ষের বাণিজ্য বা বিনিয়োগ স্বার্থকে বিরূপভাবে প্রভাবিত হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হলে বিষয়টির ওপর ব্যবস্থা গ্রহণের আগে তা বিবেচনার জন্য ফোরামকে সুযোগদানে সচেষ্ট হবে।
আর্টিকেল-পাঁচ: চুক্তিতে আরও বলা হয়, কোনো পক্ষের রাষ্ট্রীয় আইন কিংবা অন্য কোনো পক্ষের অধিকার, দায়বদ্ধতা ও সুবিধা ক্ষুণœ করবে না।
আর্টিকেল-ছয় : তবে কোনো পক্ষ লিখিত নোটিশ দিয়ে এ চুক্তির অবসান করতে পারবে। উভয় পক্ষ বাতিলের ব্যাপারে সম্মত হতে না পারলে নোটিশ প্রদানের ১৮০ দিন পর চুক্তিটির অবসান হবে। জানা গেছে, এ চুক্তি দেরি করার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। গত বছর মে মাসে মার্কিন রাষ্ট্রদূত চারটি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে টিকফা চুক্তি বিলম্বিত হওয়ার। সাতটি আর্টিকেল ছাড়াও চুক্তিতে ১৬টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এসব অনুচ্ছেদে অর্থনৈতিক উন্নয়নে শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা, ডব্লিউটিও দুর্নীতিবিরোধী চুক্তি অনুযায়ী স্বচ্ছতা আরও বৃৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হল।
প্রথম অনুচ্ছেদ : এ চুক্তিতে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন ও সহযোগিতার মনোভাব দৃঢ় এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার হবে।
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ : বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে উš§ুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
তৃতীয় অনুচ্ছেদ : বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে উভয় পক্ষ উপকৃত হতে পারে এবং বাণিজ্য বিঘœকারী, বিনিয়োগ কার্যক্রম, বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ও সংরক্ষণমূলক বাণিজ্য ব্যবস্থা ওই উপকারকে সংকুচিত করতে পারে।
চতুর্থ অনুচ্ছেদ : উভয় পক্ষ জাতি সংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশন অনুযায়ী স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত স্বচ্ছতা পালন করতে হবে।
পঞ্চম অনুচ্ছেদ : প্রবৃদ্ধি অর্জন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, বাণিজ্য সম্প্রসারণে, প্রযুক্তি বিকাশে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশী ও বিদেশী উভয় ধরনের বেসরকারি বিনিয়োগে অপরিহার্য ভূমিকা রাখবে।
ষষ্ঠ অনুচ্ছেদ : উভয় দেশের অর্থনীতিতে সেবা সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
সপ্তম অনুচ্ছেদ : বাণিজ্য বৃদ্ধির সুবিধার্থে শুল্ক বহির্ভূত প্রতিবন্ধকতা কমানো হবে।
অষ্টম অনুচ্ছেদ : বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রিপস চুক্তি, বার্ন কনভেনশন, মেধা সম্পদ সংরক্ষণ সংক্রান্ত অন্য যে কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তির বিধানগুলো পক্ষদ্বয়ের জন্য যেভাবে প্রযোজ্য সেভাবে অনুসরণ করে পর্যাপ্ত ও সঠিকভাবে মেধা সম্পদ সংরক্ষণ ও অধিকার বহাল থাকবে।
নবম অনুচ্ছেদ : শ্রম অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ডিকলারেশন অন ফান্ডামেন্টাল প্রিন্সিপাল অ্যান্ড রাইটস এট ওয়ার্ক অ্যান্ড ফলোআপের (১৯৯৮) বিধি-বিধান অনুসরণ করবে। এসব ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধন ও বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিজ নিজ শ্রম আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করবে।
দশম অনুচ্ছেদ : পরিবেশ আইন অনুসরণে পরিবেশ সুরক্ষা ও সংরক্ষণের গুরুত্ব রয়েছে। টেকসই উন্নয়নের অধিকতর বিকাশের ক্ষেত্রে বাণিজ্য ও পরিবেশ সংক্রান্ত নীতিগুলো পরস্পর সহায়ক করবে।
১১তম অনুচ্ছেদ : এক পক্ষ অন্যপক্ষের ভূখণ্ডের শিল্পোদ্যোগ, অন্যান্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগকে উৎসাহিত ও ত্বরান্বিত করবে।
১২তম অনুচ্ছেদ : দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়াবলির যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করা যাবে বলে বিবেচনা করতে হবে।
১৩তম অনুচ্ছেদ : ডব্লিউটিও চুক্তি ঠিক রেখে পরস্পর সুবিধাজনক চুক্তির মাধ্যমে ডব্লিউটিও নিয়ম মতে, বহু পাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করা হবে।
১৪তম অনুচ্ছেদ : এ চুক্তি ডব্লিউটিও সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, ডব্লিউটিও আওতায় সম্পন্ন চুক্তি, সমঝোতা এবং অন্যান্য দলিলে দেয়া অধিকার ও দায়বদ্ধ কোনো ক্রমে ক্ষুণœ হবে না।
১৫তম অনুচ্ছেদ : এ চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় পুঁজি বিনিয়োগ চুক্তির অধিকার ও দায়কে ক্ষুণœ করবে না।
১৬তম অনুচ্ছেদ : আরও সহযোগিতা ও বিশদ চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য এ চুক্তি অধিক আলোচনার একটি ফলপ্রসূ ব্যবস্থা সৃষ্টি করবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন