মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১১

নদীর নাব্যতা ও নৌপথ সুরক্ষা প্রসঙ্গ

নদীমাতৃক বাংলাদেশের সব নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় মিলে (১৯৬২-৬৭ সালে ‘নেডেকো’র জরিপ অনুযায়ী) মোট দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার। এর মধ্যে নাব্য নৌপথের মোট দৈর্ঘ্য ছিল আট হাজার ৫০০ স্ট্যাটিউট মাইল বা ১৩ হাজার ৭৭০ কিলোমিটার (১৯৭৫ সালের মাইলেজ টেবিল দ্রষ্টব্য)। নদ-নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস পেতে পেতে ১৯৮৭-৮৮ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, বর্ষাকালে মাত্র ছয় হাজার ও শুষ্ক মওসুমে মাত্র তিন হাজার ৮২৪ কিলোমিটারে নেমে এসেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্ব হচ্ছে, সারা দেশের নৌপথের নাব্যতা সংরক্ষণ এবং নিরাপদভাবে নৌচলাচল নিশ্চিত করা। নৌপথ মাঝে মধ্যে হয়ে ওঠে দুর্যোগময়। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট প্রতিকূলতা ও পরিবর্তনের কারণে নৌপথ সংরক্ষণ ও পরিচালন ক্রমেই সঙ্কটপূর্ণ হচ্ছে। তবু সীমিত সম্পদ দ্বারা, কর্মীদের অক্লান- পরিশ্রমের ফলে ক্রমেই এর পরিধি বাড়ছে। ১৯৮৭-৮৮ সালে ডাচ ডিএইচভি কর্তৃক শ্রেণিবদ্ধ নৌপথ জরিপের পর প্রায় ২৩ বছর পার হয়েছে।
নৌপথগুলোয় নৌসহায়ক সাঙ্কেতিক চিহ্ন বা মার্কিং হিসেবে মোট ৫০টি বাতিযুক্ত বয়া, ১০০টি স্ফেরিকেল বয়া, ২০টি জিআরপি বয়া, ১০টি ড্রাম বয়া, পিসি পোল মার্কা ৪০০টি, এইচ মার্কা ৩০৭টি, ডায়মন্ড মার্কা ৬৭৯টি, এক্স মার্কা ২৩৮টি, ইংরেজি ‘ও’ মার্কা এক হাজার ৫৯টি এবং বাঁশের মার্কা প্রায় চার হাজারটি স'াপিত আছে। নিরাপদভাবে নৌচলাচলের জন্য নৌপথে বয়া-বাতি মার্কার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। আগামী শুষ্ক মওসুমে রায়মঙ্গল থেকে মংলা-কাউখালী-বরিশাল-চাঁদপুর-ভৈরব-আশুগঞ্জ হয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ পর্যন- ৮০৮ কিলোমিটার নৌপথে ৭০০ টিপিসি পোলের মধ্যে লাইট এমিটিং ডায়োড ল্যান্টার্ন স'াপন করা হবে। কিন' প্রায়ই নৌপথে স'াপিত মূল্যবান বয়া-বিকন ও মার্কাগুলো দুষ্কৃতকারী-জলদস্যু-জেলেরা বিনষ্ট ও চুরি করে নাব্য নৌপথে নিরাপদ চলাচল ব্যাহত করে থাকে। এ ব্যাপারে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস'াকে বারবার পত্র লিখে, সভা করে, সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
নৌপথের ওপর গুরুত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে মোট ১৮৭টি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযান চলাচলের জন্য রুট পারমিট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে মোট ৫৪টি নৌপথে রাত্রিকালীন নৌচলাচল সুবিধাদি আছে এবং ১৩৩টি নৌপথে দিবারাত্র নৌচলাচলের সুবিধার্থে বিদেশ থেকে বয়া-বাতি সংগ্রহ করে সারা দেশের সব নৌপথকে দিবারাত্র নৌচলাচল উপযোগী করার লক্ষ্যে ১০৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে, যা দ্বারা মোট প্রায় আট হাজার কিলোমিটার নৌপথেই বয়া-বাতি মার্কা স'াপন করা যাবে। উল্লেখ্য, নৌপথ পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী ও অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বিধায় এ ক্ষেত্রে নৌযানের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বালুবাহী বাল্কহেডগুলো (ভলগেট) খুবই কম খরচে অধিক মুনাফা করছে। কিন' কঠোর নৌচলাচল বিধি অনুসরণ না করার ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছে। যদিও এ সংস'ার নিজস্ব কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই, তবু চট্টগ্রাম, চরগজারিয়া, চাঁদপুর, বরিশাল, খুলনা, মংলা, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, ভৈরব-আশুগঞ্জ, চামড়া ঘাট ও মাওয়ায় মোট ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথের টার্নিং পয়েন্টে চার-পাঁচজন করে কর্মকর্তার সমন্বয়ে ম্যাজিস্ট্রেটসহ নৌযান পরিদর্শন করতে ১৩টি ভিজিলেন্স টিম কাজ করছে এবং বিধিবহির্ভূতভাবে চলাচলকারী নৌযানকে নিরাপদে চলতে সহযোগিতা করছে। স্মর্তব্য, ১৯৬১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন- প্রায় ১৪০টি প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ২২টি নদী বন্দর ও নৌপথের ড্রেজিংসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে এবং নতুন ড্রেজার সংগ্রহসহ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল এবং আশুগঞ্জ ট্রানজিট পোর্ট অন্যতম। ১৯৭২ থেকে ৭৪ সালে মংলা বন্দর ও খুলনার সাথে নৌ যোগাযোগ সহজ করার জন্য মংলা-ঘাসিয়াখালী ক্যানেল পাঁচ কিলোমিটার ড্রেজিং করে প্রায় ৮০ মাইল নৌপথ কমিয়ে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথ পরিহার করায় দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বিশাল অবদান রাখা সম্ভব হয়। সমপ্রতি মধুমতি নদীর হুলারহাট থেকে গোপালগঞ্জের হরিদাশপুর পর্যন- ৭৮ কিলোমিটার প্রায় মৃত নৌপথকে ব্যাপক ড্রেজিং করে সারা বছর ১০ ফুট গভীরতাসম্পন্ন নৌযানের চলাচল উপযোগী করা হয়েছে। তা ছাড়া মাদারীপুর থেকে টেকেরহাট হয়ে হরিদাশপুর পর্যন- ৭০ কিলোমিটার নৌপথে ব্যাপক ড্রেজিং চলছে এবং দাউদকান্দি থেকে গৌরীপুর পর্যন- ১৪ কিলোমিটার নৌপথের ড্রেজিং কাজ শেষের দিকে। এসব নৌপথকে নিরাপদভাবে নাব্য রাখার জন্য বয়া-বাতি দ্বারা মার্কিং করা হচ্ছে। অপর দিকে মংলা-ঘাসিয়াখালী-রামপাল-মোরেলগঞ্জ নৌপথে ব্যাপক পলি পড়ে নাব্যতা আশঙ্কাজনক হ্রাস পাওয়ার কারণে গত এপ্রিল মাসে দ্রুত সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত জয়মনিরগোল থেকে শরণখোলা-আন্ধারমানিক-সন্ন্যাসী ৬০ কিলোমিটার অতিরিক্ত নৌপথকে বয়া-বাতি মার্কা দিয়ে চিহ্নিত করা হয় এবং মংলা থেকে প্রোটকল ও ট্রাংক রুট হিসেবে দু’টি নৌপথই এখন চালু আছে। শুষ্ক মওসুমে যমুনা ও সুরমা নদীতে ব্যাপক ডুবোচরের সৃষ্টি হলে প্রতি বছরই ড্রেজিংয়ের বিকল্প হিসেবে দেশীয় স্বল্পমূল্যে বাঁশ ও চাটাই দিয়ে ১৫ থেকে ২২টি শোলে বান্ডলিং করে নদীর নাব্যতা বাড়িয়ে নৌচলাচল অব্যাহত রাখা হয়। প্রতি বছর প্রায় ৮০-৯০টি পন্টুন মেরামত এবং ৫০-৬০ হাজার নৌযানকে পাইলট সেবা দেয়া হচ্ছে। ১৯১৮ সালে ম্যানুয়েলি খননকৃত গাবখান চ্যানেলে ব্যাপক ড্রেজিং করে নাব্যতা বাড়ানো হয়। সুরমা ও কুশিয়ারা নদী অত্যন- আঁকাবাঁকা বিধায় সেগুলো অনেক স'ানে লুপকাট ড্রেজিং করে শর্টকাট রুট তৈরী করে নৌচলাচল সহজ করা হয়েছে।
নৌপথে নৌযান নিমজ্জিত ও দুর্ঘটনা কবলিত হলে দ্রুত উদ্ধার করতে ১৯৬৪ সালে প্রথম উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’ জার্মান থেকে আনার পর থেকে এ পর্যন- মোট ৩১০টি নিমজ্জিত নৌযান উদ্ধার করেছে এবং ১৯৮৩ সালে বেলজিয়াম থেকে সংগৃহীত অপর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘রুস-ম’ দিয়ে এ পর্যন- মোট ১২০টি নৌযান উদ্ধার করা হয়েছে। হামজা ও রুস-ম যৌথভাবে উদ্ধার করেছে ৫৮টি নৌযান। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক মোট ৪৮৮টি নৌযান উদ্ধার করা হয়েছে। হামজা ও রুস-ম ব্যতীত বিআইডব্লিউটিএর টাগ, ক্ষণিকা ও ডুবুরিদল দিয়ে আরো প্রায় ১০০টি নৌযান উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করা হয়েছে। আগে কোথাও ছোটখাটো নৌদুর্ঘটনা ঘটলে সেখানে ডুবুরি পাঠানো হতো না। কিন' বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ট্রলারডুবি বা যেকোনো নৌদুর্ঘটনায় কোনো মানুষের মৃত্যু বা ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে জনস্বার্থে অকুস'লে ডুবুরি দল পাঠানো হয়। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্মাণাধীন (২৫০+২৫০) মোট ৫০০ টন পর্যন- উত্তোলন ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি আধুনিক উদ্ধারকারী জাহাজ আগামী জুন ২০১৩ সালের মধ্যে সংগ্রহ করার প্রচেষ্টা চলছে। বর্ষা মওসুমে নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তনে অসংখ্য ডুবোচরের সৃষ্টি হচ্ছে। তাই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও মাওয়া-চরজানাজাত/কাওরাকান্দি ফেরি রুটে নাব্যতা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক সার্বক্ষণিকভাবে ওই নৌপথে ড্রেজিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে। পাশাপাশি, ফেরি চলাচলের উপযোগী প্রয়োজনীয় চ্যানেল মার্কিং করে নৌপথ চালু রাখা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির কিছু ফেরি অতিরিক্ত ট্রাক বোঝাই করে নৌপথে চলাচলের সময় তীব্র স্রোতের কারণে মাঝে মধ্যে চরাবদ্ধ হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরের এ সময়ে উদ্ভূত নাব্যতা সঙ্কট মোকাবেলার আলোকে বিআইডব্লিউটিসিকে তাদের ফেরিগুলোর ডিজাইন ড্রাফ্ট সর্বোচ্চ ৬.৫ ফুট এবং ফেরিগুলোকে সামনে ও পেছনে সমান ড্রাফট রাখতে অনুরোধ করা হয়েছিল। এ দিকে সাময়িকভাবে সতর্কতা অবলম্বন করে ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি ফেরি সার্ভিস অব্যাহত রাখা হয়েছে। অতীতের বহু বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, নৌপথে নাব্যতা সঙ্কটের কারণে ফেরি সার্ভিস বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে আপাতত পণ্যবাহী ট্রাক, ট্যাংক লরি ও ট্রেইলারগুলোকে উদ্ভূত পরিসি'তির উন্নতি না হওয়া পর্যন- ফেরির পরিবর্তে বিকল্প রাস-া ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ ট্রাকগুলো আট টনের জায়গায় ২০-৩০ টন পর্যন- নিয়ে প্রায়ই রাস-া, পন্টুন-গ্যাঙ্গওয়ে ও ফেরির মারাত্মক ক্ষতি করছে এবং ঘাটে বিকল হয়ে মাঝে মধ্যে ফেরি চলাচল ব্যাহত করছে।
জনস্বার্থে ঢাকা শহরের চার দিকে বৃত্তাকার নৌপথ চালুকরণ প্রকল্পের সদরঘাট থেকে আশুলিয়া পর্যন- ২৯ কিলোমিটার এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে টঙ্গী পর্যন- ৪৫ কিলোমিটার নৌপথে প্রতিদিন শত শত মালবাহী নৌযান চলাচল করছে বিধায় ঢাকা-না’গঞ্জ শহরের যানজট কিছুটা লাঘব হয়েছে এবং দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। বুড়িগঙ্গা-শীতলক্ষ্যা-বালু-তুরাগ-ধলেশ্বরী ও টঙ্গী খালসহ মোট ছয়টি নদ-নদীর সমন্বয়ে বৃত্তাকার নৌপথের মোট দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১১০ কিলোমিটার।
বাংলাদেশের যমুনা ও পদ্মা নদী সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং এগুলো পূর্বাভাস প্রদানযোগ্য নয়। এসব নদীর বয়ে আনা পলিমাটির পরিমাণও বছরে প্রায় দুই বিলিয়ন টন। ফলে এসব অবাধ্য নদী শাসন করা কঠিন বিধায় প্রতি বছর শুকনো মওসুমে আরিচা-বাঘাবাড়ী ও ঢাকা-বরিশাল নৌপথের নাব্যতা সঙ্কটও চরম আকার ধারণ করে থাকে। তবে বিআইডব্লিউটিএ তার মাঠকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টা দিয়ে ড্রেজিং, বান্ডলিং ও সার্বক্ষণিকভাবে মাকির্ং করে নৌচলাচল অব্যাহত রাখছে। বিশেষ করে বিগত তিন-চার বছর যাবৎ এসব রুটে নিরাপদভাবে নৌচলাচল অব্যাহত রাখা হয়েছিল (আলহামদুলিল্লাহ)। ২৭৬৯ কিলোমিটার নৌপথকে রাতে চলাচল উপযোগী করার আওতায় আনা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রোটকল রুট হচ্ছে রায়মঙ্গল থেকে চালনা বাজার (১০৩ কিমি.) এবং আশুগঞ্জ থেকে সিলেটের জকিগঞ্জ পর্যন- (২৯৮ কিমি.) = ৪০১ কিলোমিটার। অবশিষ্ট ৫০২৬ কিলোমিটার এবং অন্যান্য নৌপথে আন-র্জাতিক মান অনুযায়ী বয়া, বিকন, পিসি পোল, আয়রন মার্কা স'াপন ও সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণ করতে হলে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।
দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১০০টি নৌপথের মধ্যে সর্বমোট ৬৮৬ কিলোমিটার নৌপথে অতি জরুরি ভিত্তিতে নাইট নেভিগেশন চালুর কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
অতি পুরনো অকেজো ১০টি নৌযান বিক্রি করা হয়েছে এবং নতুন একটি বয়-টেন্ডার দু’টি বে-ক্রসিং হাই পাওয়ার টাগ শিপ, একটি সি-সার্ভে শিপ, তিনটি রিভার সার্ভে ভেসেল, পাঁচটি সার্ভে ওয়ার্ক বোট ও পাঁচটি স্পিড বোট ক্রয় প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তা ছাড়া ৫৩টি নৌপথ ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের যে মহাপ্রকল্প নেয়া হয়েছে, তার মধ্যে প্রথমপর্যায়ে ২৪টি নৌপথে ব্যাপক ড্রেজিংয়ের জন্য ৪২০১.৮০ কোটি টাকার প্রকল্পটি শিগগিরই পাস হবে বলে আশা করা যায়, যার মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে চরগজারিয়া-চাঁদপুর-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ নৌপথের উন্নয়নও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মাধ্যমে মোট তিন হাজার ৩৬২ কিলোমিটার লম্বা নৌপথে মোট ১৩ কোটি ঘনমিটার মাটি খনন করা হবে। তা ছাড়া তিনটি নতুন ড্রেজার সংগৃহীত হয়েছে, ১০টি ড্রেজার কেনার জন্য টেন্ডার জমা নেয়া হয়েছে এবং আরো ১৭টি ড্রেজার কেনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এভাবে যদি নৌপথের ব্যাপক উন্নয়নের সুষ্ঠু ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ হবে সত্যিকার অর্থেই নদীমাতৃক ও পরিবেশবান্ধব।
লেখক : নদী গবেষক, পরিচালক (নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন), বাঅনৌপক

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন