বুধবার, ৮ মে, ২০১৩

ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা আড়াল করতে কিছু মিডিয়ায় মিথ্যাচার করা হচ্ছে : হেফাজত


শাপলা চত্বরে নবীপ্রেমিক জনতার ওপর ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা, লাশ গুম ও পুলিশী নৃশংসতা আড়াল করতে কতিপয় মিডিয়ার ‘কুরআন পোড়ানো’ সম্পর্কিত পরিকল্পিত মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আশরাফ আলী নিজামপুরীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি করা হয়েছে।

বিবৃতিটি এখানে দেয়া হলো-
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ঢাকা অবরোধ ও পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে এক বিবৃতিতে বলেন, গত ৫ মে ১৩ দফা দাবিতে ঢাকা অবরোধ শেষে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে, রাতের অন্ধকারে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে লাখো জনতার ওপর পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও বিশেষ পোশাকধারী সশস্ত্র কিলিং স্কোয়াডের যৌথ অভিযানের নামে ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা, লাশ গুম ও নজীরবিহীন পুলিশী নৃসংশতার ঘটনা আড়াল করতে কতিপয় পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়া ‘কুরআন পোড়ানো’ সম্পর্কিত নির্জলা মিথ্যাচার শুরু করেছে। যার ফলে জনমনে মারাত্মক বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষত, বায়তুল মুকাররম এলাকায় বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি ক্যাডার বাহিনী দক্ষিণ গেটের ফুটপাতে বন্ধ থাকা ইসলামি বই ও কুরআন শরীফের দোকানে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়াও ১৫/২০টি জুতার দোকানেও তারা একইভাবে আগুন দেয়। এতে পুড়ে যায় কুরআন শরীফসহ বিভিন্ন ধর্মীয় পুস্তকের দোকান। পাশাপাশি সম্পূর্ণ ভস্মিভূত হয় স্বল্প আয়ের এসব ুদ্র ব্যবসায়ীর রুটি-রুজির এই অবলম্বন। বহু সংখ্যক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এবং সেই দোকানগুলোর দু’একজন মালিকও। কিন্তু দু®কৃতকারীদের সহায়তার জন্য অস্ত্রহাতে দাঁড়িয়ে থাকা সন্ত্রাসী ও পুলিশের ভয়ে কেউ প্রতিবাদের সাহস পায়নি। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা দেবাশীষের নেতৃত্বে এই জঘন্য অপকর্ম ঘটানো হলেও অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে তা হেফাজতে ইসলাম ঘটিয়েছে বলে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। ৭ মে মঙ্গলবারের দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় এতদসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত্বসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অনুরূপভাবে পুরো ঢাকায় সেদিন আওয়ামী লীগের গুণ্ডবাহিনীর চালানো তাণ্ডবকে হেফাজতের কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত বলে সরকার সমর্থক মিডিয়াগুলোতে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা এই ঘটনার এবং এর সঙ্গে জড়িত আসল অপরাধীদের আড়াল করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত সিন্ডিকেটেড অপ্রপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অন্যদিকে দেশবাসীর অবগতির জন্য ৭ মে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হয়। যা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের কোটি কোটি নবীপ্রেমিক জনতার প্রাণের সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে পুরো দেশের নবীপ্রেমিক ও শান্তিপ্রিয় জনতা ছিল, আছে এবং থাকবে। গণহত্যা, তথ্যসন্ত্রাস কিংবা কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দলমত নির্বিশেষে তাওহীদি জনতার এই মহাজাগরণ নস্যাত করা যাবে না। বৃথা যাবে না, হাজার হাজার আলেম-ওলামা ও তাওহীদি জনতার শাহাদাত। আল্লাহ আমাদের সহায়। বিজয় আমাদের সন্নিকট। পীর-আউলিয়া ও বীর-মুজাহিদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে নাস্তিক-মুরতাদ ও তাদের দোসরদের কবর রচিত হবে ইনশাআল্লাহ। অন্যদিকে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির পর এখন পর্যন্ত নিখোঁজ মাদরাসা ছাত্র, শিক্ষক ও বিভিন্ন লোকজনের তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহের জন্যে খোলা অনুসন্ধান সেল খোলা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের জেলা, থানা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও বিভিন্ন মাদরাসা ভিত্তিক সমন্বিত অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বশীল প্রতি নির্দেশ ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন