বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১২

গলদটা গোড়াতেই

গণপ্রজাতন্ত্রের সংবিধানখানা কারো আমলে নেই। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুমড়ে মুচড়ে দলের ইচ্ছামতো সাজানো হয়েছে। সংবিধানসম্মতরা নন, আজ্ঞাবহরা ক্ষমতার বরপুত্র। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দলীয় ক্যাডার সেজে গেছেন। মন্ত্রীরা শপথ ভুলে গেছেন। বিচার-আচার সরকারের ইচ্ছাপত্রে রূপান্তরিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ কারা মুসাবিদা করেন, আর কাদের সুপারিশে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা ক্ষমা পেয়ে যায়, কিছুই বোঝা যায় না। মওলানা ভাসানী যাকে আন্দোলন-সংগ্রামের কাণ্ডারি হিসেবে বলা হয় ‘প্রফেট অব ভায়োলেন্স,’ যাকে কদমবুচি করে বঙ্গবন্ধু আন্দোলনের পথ পাড়ি দিতেন, তাকেও ইতিহাস বিকৃতির জটাজালে জড়িয়ে দিলেন খোদ রাষ্ট্রপতি। কাউকে বড় করার জন্য মওলানার মতো বটবৃক্ষকে ছোট করা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ইতিহাস বিকৃতি তার চেয়েও দুঃখজনক। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, পুলিশ কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন সদস্য ও সরকারদলীয় নেতারা সবাই আইন-আদালত ও সংবিধানের ঊর্ধ্বে উঠে গেছেন। সম্ভবত সংবিধানকে শুধুই একখানা পুস্তিকা ভাবার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
দেশের সংবিধানের প্রতি কারো সমীহবোধ নেই বলেই হয়তো এক ধরনের প্রহসন ও আত্মপ্রবঞ্চনা থেকে আমরা মুক্ত হতে পারছি না। এ ব্যাপারে জনগণের দায় কম, কেন ক্ষেপে উঠছে নাÑ এমন অভিযোগ তোলা ছাড়া জনগণের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছোড়া সম্ভব নয়। তবে রাজনৈতিক দলগুলো কোনোভাবেই অভিযোগমুক্ত হতে পারে না। বর্তমান শাসক দল পূর্বাপর স্ববিরোধী রাজনীতিচর্চায় অভ্যস্ত। তারা পথ রচনা করেন না, পথ তাদের টেনে নিয়ে যায়। অনেকটা কুকুর লেজ নাড়ে না, লেজ কুকুরকে নাড়িয়ে দেয়। এ ধরনের একটা অবস্থা তাড়া করে বলেই বৈপরীত্য তাদের ঘিরে ধরে আছে। গোঁজামিল দিয়ে সময় পার করা ছাড়া তাদের যেন আর কোনো গত্যন্তর নেই। মুসলিম লীগের উদর থেকে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্মই হয়েছিল গোঁজামিল দিয়ে। তার পরও মুসলিম লীগের অপশাসন, আইয়ুব-ইয়াহিয়ার সীমাহীন ঔদ্ধত্যের মোকাবেলায় লাহোর প্রস্তাবের বরাতে ছয় দফা, আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থান পূর্ব বাংলার গণমানুষকে প্রভাবিত করেছে। তার পরও আওয়ামী লীগ সত্তর সালে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েও গোঁজামিলের ঊর্ধ্বে উঠে একটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাতে পারেনি। পদে পদে রহস্যঘেরা আচরণ করেছে। এখনো স্বাধীনতার ঘোষণা বিতর্ক থেকে পাক সেনাদের ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ পর্যন্ত অনেক তথ্যই গোঁজামিল দিয়ে বর্ণনা করা হয়। তা ছাড়া ভারত এগিয়ে না এলে মুক্তিযুদ্ধে এককভাবে নেতৃত্ব দেয়ার দাবি কখনো করা সম্ভব হতো না। এ দেশ অবশ্যই স্বাধীন হতো সেটা কোনো এক দলের নেতৃত্বে একক কৃতিত্ব দাবিতে নয়, সেটা হতো গণযুদ্ধের অনিবার্য পরিণতিতে, সেটাও ছিল শুধুই সময়ের ব্যাপার।
মুক্তিযুদ্ধ শেষে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ পেয়েও আওয়ামী লীগ প্রথম সুযোগে গণ-আকাক্সার অনুকূলে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য সংবিধান জাতিকে উপহার দিতে পারেনি। যে সংবিধান অত্যন্ত দ্রুততার সাথে জাতিকে উপহার দেয়ার দাবি করা হয়, সেটা দিয়েই আনুষ্ঠানিক ও আইনি গোঁজামিলের পথে পা বাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। একটি নতুন উদ্যমে জাগ্রত জাতির জন্য সংবিধান রচনার যে প্রক্রিয়া, আওয়ামী লীগ সে পথে হাঁটেনি। ম্যান্ডেট নিয়ে গ্রহণযোগ্য সংবিধান রচনা করার দায়ও বোধ করেনি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে একটি জাতীয় সরকার গঠনের আকুতিও গলাটিপে হত্যা করা হলো। ভারতীয় পঞ্চশিলার আদলে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদকে মূলনীতি ঘোষণা করা হলো এবং সেটাই জাতির ওপর চাপিয়ে দিলো। বলা হলো এ সবই ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সেই যে গোঁজামিল দেয়া হলো, তারই খেসারত জাতি এখনো দিয়ে যাচ্ছে। সেই গোঁজামিলের বরাতেই কোন দল নিষিদ্ধ হবে, কারা চেতনাপন্থী, কারা নয় তা পরিমাপ করা শুরু হলো।
সংবিধান রচনা করা হলো ভারতীয় অবয়ব মাথায় রেখে বিলেতি কায়দায়। সংসদীয় গণতন্ত্রকে করা হলো প্রাণভোমরা। তাহলে সমাজতন্ত্র কেন রাখা হলো। এখন আমরা মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারক-বাহক। সমাজতন্ত্র জাদুঘরে। রাষ্ট্র চলছে গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে নিখাত দলতন্ত্রের ফরমায়েশি ফর্মুলায়। সাম্যবাদের বা কমিউনিজমের যে তত্ত্বকে প্রায়োগিক সমাজতন্ত্র ধারণ করে, তার লেশমাত্র আমাদের সরকার কাঠামো ও অর্থনীতিতে নেই। তাহলে সমাজতন্ত্রের এই গলিত লাশ আমরা বহন করছি কাকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য। শুধুই বামপন্থীদের রাজনৈতিক ভাষায় ক্ষমতার কোলবালিশ বানানোর জন্য। এবং সেই কোলবালিশ ক্ষমতার স্বার্থে ব্যবহারের জন্য। যৌবনে মার্কসবাদ-মাওবাদের সবক নিয়েছিলাম, চেয়ারম্যান মাওয়ের পাঁচটি উদ্ধৃতি ও শ্রেণী সংগ্রামের তাত্ত্বিক নামতা এখনো মুখস্থ। কখনো এর প্রয়োগ দেখিনি। এক ধরনের আবেগ ও রোমান্টিক ভাবনা ছাড়া সমাজতন্ত্র এক ধরনের আত্মপ্রবঞ্চনার তত্ত্বীয় ধারণায় রূপান্তরিত হয়েছে। এমনটি হয়েছে বলেই ধনিক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষায় মতিয়া, নাহিদ, দিলীপ বাবু, মান্নান খানরা মুক্তবাজার নামে শ্রেণী বৈষম্যের অর্থনীতির গলিত লাশ পাহারা দিচ্ছেন। মাঝে মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে সুড়সুড়ি দেয়া চটকদার বক্তৃতা দিচ্ছেন। মুণ্ডুপাত করছেন পুঁজিবাদের। অথচ পুঁজিবাদের কাচের দেয়াল দেয়া ঘরে বসে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের ভূত তাড়াচ্ছেন, একই সাথে প্রগতিবাদের ডুগডুগিও বাজাচ্ছেন।
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ আরেক ধরনের ভণ্ডামি, নয়তো ভড়ং। পৃথিবীর কোথাও এর কোনো তত্ত্বীয় প্রয়োগ নেই। আরো দু-চার জায়গায় যা চলছে তা আমাদের পড়া ব্যাকরণসিদ্ধ রাজনীতি নয়, মেকিয়াভ্যালির ভাষায় বুঝতে চাইলে ধূর্তামির নামান্তর। নয়তো ধর্ম নিয়ে ব্যবসার বেসাতি মাত্র। এই জনপদ কখনো ধর্মনিরপেক্ষ ছিল না। পাল আমলে রাষ্ট্রাচার বৌদ্ধ ধর্মের অনুসরণে হতো। সেন আমলে ব্রাহ্মণ্যবাদী ধারা শুধু পুষ্টই ছিল না, জাত-পাতে পিষ্ট জাতি ছিল অচ্যুত ও চ্যুতের বিভাজনে বিভক্ত। সুলতানি ও নবাবী আমলে রাষ্ট্র কোনো ধর্ম মানতে বাধ্য করেনি, না মানলে কোনো কৈফিয়তের মুখোমুখিও দাঁড় করায়নি। ইংরেজ আমলে ছিল শোষণ-বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়ন আর পাশ্চাত্যকরণের উৎসবমুখর। শাসকের ইচ্ছামতো ধর্ম মানা যেত, ইচ্ছামতো মানা যেত না। এ দেশেই দাড়ি ও পাগড়ির ওপর কর দিতে হতো। সেই ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। তা ছাড়া ভাগ কর শাসন কর নীতির কারণে বেনিয়া শাসক হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি ছিল শাসন-শোষণের কৌশল। তারপর দ্বিজাতিতত্ত্বের উত্থান ও দেশ বিভাগ। সেই সন্ধিকালে নীতিনির্ধারকদের মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। কিন্তু সাধারণ জনগণ ভেবেছে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের জাগৃতি ঘটছে। অথচ রাজনীতিতে ধর্মের প্রতিফলন ঘটানো ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় শাসকদের ইচ্ছা, সততা কিংবা যোগ্যতা কোনোটাই ছিল না। স্বপ্নভঙ্গের নানা উপসর্গের সাথে আইয়ুব-ইয়াহিয়ার ক্ষমতার জোয়াল ভাঙার তাড়না থেকেই মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছিল। সঙ্গত কারণেই বলা যায়, এই জনপদে কখনো ধর্মনিরপেক্ষ মানুষের বসতি ছিল না। এই জনপদ ছিল ধার্মিক মানুষের অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালনের অভয়ারণ্য। এ পরিচয় আবহমানকাল থেকেই। তাই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের প্রচারণা এক ধরনের প্রতারণা। পৃথিবীর কোথাও ধর্ম কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নয়, কোনো কোনো রাষ্ট্র কাগুজে মুদ্রায়ও ধর্মের ছাপ ফেলেছে। রাষ্ট্রীয় মনোগ্রামে ধর্মের প্রকাশ ঘটিয়েছে। শপথবাক্যেও ধর্মের উপস্থিতি প্রণিধানযোগ্য। হিন্দি, হিন্দুত্ববাদ ও মহাভারতের স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখার স্বপ্নে ধর্মাশ্রয়ী ভারত বিভোর।
যদিও ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মের হিতোপদেশ ছাড়া স্পেশাল ল বলতে কিছুই নেই। অবশ্য ইহুদিদের ধর্মাচারে কিছু বিধিবিধান সমাজ ও রাষ্ট্রকে স্পর্শ করে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের ভড়ং এক ধরনের শাসন কৌশল ছাড়া কিছুই নয়। তাই সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্মের গোঁজামিল দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের কোরাস গাইতে হচ্ছে। তাহলে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মূলনীতি শোভা পাবে কেন। কাকে খুশি করার জন্য এই ভড়ং। বাংলাদেশের মানুষ মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নির্বিশেষে কেউ ধর্মহীন নয়। সবাই ধর্মপ্রাণ কিংবা ধর্মভীরু। কিন্তু আগাগোড়া অসাম্প্রদায়িক। এখানে দেশ বিভাগের প্রেক্ষাপট নেই। সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়ার মতো কোনো বিশেষ পন্থী নেই। বামপন্থীদের মধ্যে যারা ধর্মের ব্যাপারে অসহিষ্ণু তারা সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষার নামে কখনো কখনো গরিষ্ঠ মানুষ ও বিশ্বাসীদের নিয়ে বাড়াবাড়িমূলক বক্তব্য দিলেও ধর্মহীনতাকে জোর করে সরাসরি চাপাতে চায় না বা সাহস পায় না। তারা তাদের তত্ত্বীয় ধারণা ফেরি করতে গিয়ে নাস্তিক হওয়ার ভান করে। এ ভান ও ভাব আরেক ধরনের আত্মপ্রবঞ্চনা। তা ছাড়া গণতান্ত্রিক চেতনাও সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মবিশ্বাসকে আনুকূল্য দিতে বলে। সর্বত্র গণতন্ত্র মাথা গুনলেও এখানে কথিত গণতন্ত্রপন্থীরা বড়ই অনুদার।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু সংবিধানে এভাবে উপস্থাপনে কিছু প্রশ্ন আছে। আমাদের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় নিয়ে কোনো বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তবে নাগরিক পরিচয়ে আমরা বাংলাদেশী, হালে যা ব্যাখ্যাসহ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। আমাদের দেশে অনেক অবাঙালি নৃগোষ্ঠী আছে, তারা বাঙালি নয়, বাংলাদেশী। এখানেও সংবিধান শুরুতেই গোঁজামিল দিয়ে শুরু হয়েছিল, বিলম্বে বোধোদয় অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হলেও আবেগাশ্রয়ী রাজনীতির জন্য শাসকেরা অবুঝ থাকতে চান।
গণতন্ত্র নিয়ে কোনো মন্তব্য করা অর্থহীন। বঙ্গবন্ধু ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে বাকশালের পথ ধরে তার আজীবনের গণতন্ত্রপ্রেমকে প্রশ্নবোধক করে গেছেন। তারপর জাতি নতুন নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে। এখন সংবিধান অভিজ্ঞতার ভারে নয়, জোড়াতালির তোড়ে ভাসছে; যা এক ধরনের গোঁজামিল ছাড়া আর কিছুই নয়। এই আমলে এসে সরকার গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক শিষ্টাচারকে জ্যান্ত কবর দিয়েছে। সংবিধানকে পোস্টমর্টেম টেবিলে নিয়ে গেছে। এখন গণতন্ত্র আছে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞায়, সংবিধানের নতুন-পুরাতন সংস্করণের পাতায় এবং প্রেস কাবের সামনে মানববন্ধনের ব্যানার-ফেস্টুনে। গণতন্ত্রের বোবাকান্না ও আর্তনাদে বিরোধী দল কঁকিয়ে উঠছে। অন্যায় আস্ফালন ও অন্যায্য ক্ষমতাচর্চার বিপরীতে হরতাল-অবরোধ ধেয়ে আসছে।
তত্ত্বাবধায়ক বিতর্ক এখন তুঙ্গে। জাতি সম্ভবত সরকারকে সঠিক মেসেজটি দিয়েই দিয়েছে। তারা কী চায় আর কী চায় না, এ বার্তা এখন এতটা লাউড অ্যান্ড কিয়ার যে, কারো কানে না ঢোকার কথা নয়। তা ছাড়া দ্বিধারার রাজনীতির বাইরে যে দাবিটি সর্বত্র অনুরণিত হচ্ছে, তাতে একটি গণমুখী সংবিধানের দাবি আবার সামনে আসছে। বর্তমান সংবিধান সময় ও জাতির মন-মননকে যেন আর আত্মস্থ কিংবা ধারণ করতে পারছে না।
সম্ভবত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উসকানি ও সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণ কিংবা বাড়াবাড়ির জের ধরে যে হরতাল হয়ে গেল তাতেও জনগণের হৃদস্পন্দন স্পষ্ট। অন্যের যাত্রা ভঙ্গের জন্য সরকার নিজের কানই শুধু কাটেনি, নাকও ভেঙেছে। এরপর আর কোনো প্রতারণা ও ছেলেভুলানো গল্প সম্ভবত জনগণ শুনতে চাইবে না। গণতন্ত্রের গল্প শোনাবেন আবার নাগরিক অধিকার কেড়ে নেবেন, সেই সময় পার হয়ে গেছে। এখন ইট ছুড়লে পাটকেল খেতে হবে। ওপরের দিকে থুথু ছিটালে নিজের গায় মাখতে হবে। শিশুও অসহায়বোধ করলে শিথিল মুষ্টির আঘাত হানে। বিরোধী দল তো আর শিশু নেইÑ তারাও দেখে ও ঠেকে লায়েক হয়ে উঠেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন