সোমবার, ৫ মার্চ, ২০১২

দেশপ্রেমের পাঠ - ২

“উপদেষ্টারা এমনভাবে কথা বলেন, মনে হয়, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা নন,
 তাঁরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের উপদেষ্টা” - রাশেদ খান মেনন।


এক.
মূল প্রতিপাদ্যে যাওয়ার আগে দেশপ্রেম নিয়ে সামান্য গৌড়চন্দ্রিকার অবতারণা করতে চাই। বিগত আশির দশকের প্রথম দিকে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবরের কথা অনেকেরই হয়তো স্মরণে আছে। খবরটি ছিল ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য বিষয়ক। সেই খবরে যাওয়ারও আগে উল্লেখ্য যে, সত্তরের দশকে সীমান্তের ওপার থেকে বৈধ ও অবৈধ পথে আমদানি হওয়া ভারতীয় বস্ত্রে যখন বাংলাদেশের বাজার সয়লাব, তখন দেশের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প ও বস্ত্রকলগুলোর উদ্যোক্তারা বাজারে ভারতীয় বস্ত্রের প্লাবন ঠেকানোর জন্য এক তাৎপর্যপূর্ণ আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। তারা তখন নি¤œমানের ভারতীয় শাড়ির বিপরীতে ভালো মানের শাড়ি উৎপাদন করে বাজারজাতের কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ভারতীয় পণ্যের প্রতি আমাদের ‘বাঙ্গাল’ মন-প্রাণ তখন এমনই অন্ধমোহের জ্বরে আক্রান্ত যে, সে সময় ভালোমানের দেশীয় শাড়ি বাদ দিয়ে নি¤œমানের ভারতীয় শাড়ি কেনার জন্য দেশের বিপনীগুলোতে লম্বা লাইন পড়ে যেতো। মনে আছে, তখন হুজুগে বাঙ্গালদের ভারতীয় পণ্যের প্রতি অন্ধ মোহের ধাক্কা সামলাতে না পেরে বাজারের দোকানিরা দেশীয় কাপড়ে বিজাতীয় ছাপ মেরে ভারতীয় শাড়ি বলে বিক্রি করতে বাধ্য হতেন। আর সে সময় বাংলাদেশী কাপড় ভারতের বাজারে রফতানির তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না। সাধারণভাবে ভারতের বাজারে তখন বাংলাদেশের ইলিশ মাছ ও কাঁচা পাট ছাড়া আর কিছু রফতানি হতো না।
অতঃপর আশির দশকের প্রথম দিকে একবার কিছুদিনের জন্য ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ মাছ রফতানি বন্ধ হয়ে গেলে ভারতের, বিশেষকরে পশ্চিমবাংলার (কলকাতার) বাবুরা যখন পদ্মার ইলিশে রসনা তৃপ্ত করার জন্য পাগলপ্রায়, তখন ভারতে ইলিশ রফতানি নিশ্চিত করার জন্য শুধু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসরকারই নয়, দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারও ঢাকার সরকারের সাথে দেনদরবার শুরু করে। আর সেসময়ই ঘটে এক চমকপ্রদ ঘটনা। বাংলাদেশ যখন শর্ত আরোপ করে যে, ভারতকে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ আমদানির সঙ্গে সমপরিমাণ মূল্যের জামদানি শাড়িও আমদানি করতে হবে, তখন আমাদের ‘বন্ধু’ রাষ্ট্রটি বেঁকে বসে। এমনকি ওই সময় বাংলাদেশের শর্ত মেনে ভারত সরকার যাতে বাংলাদেশ থেকে জামদানি শাড়ি আমদানি না করে তার জন্য ভারতের, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের বস্ত্রকলগুলোর মালিকেরা কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল করেন। তারা একথাও ঘোষণা দেন যে, ঢাকা এমন শর্ত আরোপ করলে প্রয়োজনে তারা ইলিশ মাছ খাওয়া বন্ধ করে দেবেন, তবুও নিজ দেশের কাপড় কলগুলোর স্বার্থে তারা বাংলাদেশের কাপড় আমদানি করবেন না। এখন প্রশ্ন হলো, এর জন্য কি ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গবাসীকে দোষ দেওয়া যায়? না মোটেও না। বরং আমি বলবো, এটা হলো তাদের গভীর দেশপ্রেমেরই বহিঃপ্রকাশ।
দুই.
আশির দশকের সেই ঘটনাটা টানলাম আজকের চল্লিশ বছরের স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার এবং প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর দেশপ্রেমের একটি নির্মোহ পর্যালোচনার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকালে নিজের নির্ধারিত ঢাকা সফর বাতিল করে তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি ঠেকানোর জন্য যে কূটনৈতিক ‘নাটকের’ অবতারণা করেন তাকে ইতিমধ্যে অনেকে দিল্লি সরকারেরই একটি ‘চাণক্য’ চাল হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার মধ্যে হয়তো সত্যতাও আছে। কিন্তু  তারপরও মমতা ব্যানার্জীর এই আচরণকে শুধুমাত্র দিল্লি-নির্ভর কূটনৈতিক চাল অভিহিত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হবে। বরং আমি মনে করি, মমতা ব্যানার্জীর এই আচরণের মধ্যে তাঁর দেশপ্রেমও বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। সেটা যদি গোটা ভারতের জন্য না-ও হয়, তবু অন্তত পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপটে তো বটেই।
মমতার যুক্তি ও আশঙ্কা হলো, দিল্লির সঙ্গে ঢাকার দ্বিপাক্ষিক তিস্তা চুক্তি হলে পশ্চিমবঙ্গ তিস্তার পানি বাংলাদেশের চেয়ে কম পাবে।  চুক্তিটা সেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশ ও স্বাধীন ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, সুতরাং তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি তো সমঅধিকারের ভিত্তিতেই হতে হবে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র রাষ্ট্র আর ভারত বিশাল বড় রাষ্ট্র - সেই হিসাব করে যদি পানিবন্টন চুক্তি হয় তাহলে বাংলাদেশের তো তিস্তার পানি প্রায় একদমই পাওয়ার কথা নয়। তাছাড়া বাংলাদেশ তো পশ্চিমবাংলার মত ভারতের কোনো রাজ্য নয়। বাংলাদেশ হলো ভারত রাষ্ট্র থেকে আলাদা এক স্বাধীন রাষ্ট্র এবং সে অনুযায়ী দুই দেশের অভিন্ন নদী তিস্তার পানির ওপর ভারতের যে অধিকার আছে, বাংলাদেশেরও সেই একই অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশ তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পেলে ভারতের একটি রাজ্য  (যেমন পশ্চিমবঙ্গ) যদি কম পানি পায়, তাহলে নিখিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব হলো, প্রতিবেশী স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ও তা রক্ষার বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সমস্যা গোটা ভারতের প্রেক্ষাপটে আভ্যন্তরীণভাবে সমাধান করা।
কিন্তু বাংলাদেশ তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পেলে পশ্চিমবাংলা যদি কম পানি পায় তাহলে মমতা ব্যানার্জী তা মানতে রাজী নন। তিনি তাঁর রাজ্যের স্বার্থে বাংলাদেশকে তার ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে হলেও তিস্তার পানি তিনি রাজ্যের পুরো চাহিদা অনুযায়ীই চান। যে যা-ই বলুন, আমি মনে করি, এটা দিল্লি কলকাতার যৌথ কূটনৈতিক চালের ঊর্ধ্বে মতার দেশপ্রেমও বটে। এ ক্ষেত্রে আমার কথা হলো, বাংলাদেশের শুধু আজকের প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীবর্গ নন, আগের সকল প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারপ্রধানদের যদি একজন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর মতোও এমন দেশপ্রেম থাকতো, তাহলে ভারতের সাথে অভিন্ন নদীগুলোর পানি সমস্যা চল্লিশ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের গলার ফাঁস হয়ে থাকতো না। আমাদের দেশপ্রেমের বিরল দৃষ্টান্ত কি এখনো কম জ্বাজ্জল্যমান? একটি বাস্তব উদাহরণ দিই। আজকের আওয়ামী মহাজোট সরকারের মন্ত্রীপরিষদের মাননীয় সদস্যগণ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানিত উপদেষ্টাগণ যখন ভারতের সঙ্গে সকল দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানের নানা পদক্ষেপ নিতে গিয়ে স্বাধীন দেশের প্রতিনিধি হিসেবে তো দুরের কথা, এমনকি ভারতের কোনো রাজ্য সরকারের মন্ত্রীর মত করেও নয়, খোদ দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্ত প্রতিনিধির মতো কথা-বার্তা বলেনÑতখন আমাদের চল্লিশ বছরের গলার ফাঁস ঢিলা হয় না, আরো শক্ত হয় এবং গলায় নতুন নতুন ফাঁস পরে।
তিন.
প্রতিবেশী দেশের একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দেশপ্রেম নিয়ে কথা শেষ হলো না। কথা আরো আছে। শুধু অভিন্ন নদী তিস্তা নয়, আন্তর্জাতিক নদী গঙ্গার পানির হিস্যা নিয়েও এখন সোচ্চার হয়ে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। গঙ্গার ওপর দিল্লি সরকারের তৈরি ফারাক্কা বাঁধের সর্বমোট ১০৮টি স্লুইস গেটের মধ্যে মাত্র দুটি স্লুইস গেটে সম্প্রতি ফাটল ধরার কারণে দুর্ঘটনাবশত ফাটল চুয়িয়ে কিছু বাড়তি পানি বাংলাদেশে এসে পড়ায় মমতা ব্যানার্জী বিশ্ববাসীকে জানান দিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আর কেবল ক্ষোভ প্রকাশ করেই তিনি নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকেননি। সঙ্গে সঙ্গে দিল্লি দৌড়ে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ জরুরি নজরে এনেছেন। মমতার অভিযোগ খুবই গুরুতর। তাঁর দাবি, ‘দুটি স্লুইস গেটে ফাটল সৃষ্টির কারণে ফাটল চুয়িয়ে বাংলাদেশে অতিরিক্ত পানি চলে যাচ্ছে, তার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের ভাগীরথীসহ বেশ কয়েকটি নদী শুকিয়ে যাচ্ছে।’ মমতা ব্যানার্জী অভিযোগ করে আরো বলেছেন, ‘ফারাক্কার দুটি স্লুইস গেটের ফাটল দিয়ে অতিরিক্ত পানি বাংলাদেশে চুয়িয়ে যাওয়ার ফলে পশ্চিমবঙ্গে পানি ও বিদ্যুতের ব্যাপক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে।’
মমতা ব্যানার্জীর অভিযোগ কতখানি সত্য, অথবা ভবিষ্যতে উজানের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বাংলাদেশকে একেবারেই না দেওয়ার অজুহাত তৈরির জন্য এটিও দিল্লি-কলকাতার ‘চাণক্য’ কৌশল কিনা এ প্রশ্নটি বিবেচনায় রাখার পরও বলতে হয়, এর মধ্যেও প্রকাশ পেয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর প্রগাঢ় দেশপ্রেম। তবে বাংলাদেশের মানুষেরও অভিযোগ আছে। সে অভিযোগ মমতার অভিযোগের চেয়েও অতিগুরুতর। ফারাক্কা বাঁধের ১০৮টির মধ্যে দুটি স্লুইস গেটের ফাটল চুয়িয়ে তিন মাসে আসা ‘অতিরিক্ত’ পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করার কারণে যদি পশ্চিমবঙ্গের বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে, তাহলে সে অনুযায়ী ভারত সরকারের তৈরি ফারাক্কা বাঁধ ও তার উজানে আরো শত শত মিনি ফারাক্কার প্রতিক্রিয়ায় আটত্রিশ বছরে বাংলাদেশের ক্ষতি ও বিপর্যয় হয়েছে হাজার গুণ বেশি। তারপরও বলতে হয়, উজানে বাঁধ দিয়ে নদ-নদীর পানি প্রত্যাহারের কারণে প্রতিবেশী ভাটির দেশের এমন নজিরবিহীন ভয়াবহ বিপর্যয়ের ঘটনা দিল্লি ও কলকাতার বিবেককে নাড়া না দিলেও এবং তার ফলে বাংলাদেশের মানুষের বুকে বড় ক্ষত তৈরি হলেও - অন্তত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্বার্থরক্ষায় মমতা ব্যানার্জীর দেশপ্রেমের তারিফ না করে পারা যায় না।
অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের আজকের এবং গত চল্লিশ বছরের সরকার ও সরকার প্রধানদের যদি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মতোও দেশপ্রেম থাকতো, তাহলে উজান দেশের নদী আগ্রাসানের কারণে বাংলাদেশের যে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে তা কোনোভাবেই ঘটতে পারতো না। দেশপ্রেমের ছবক মমতা ব্যানার্জী আমাদেরকে আরো কতভাবে দিচ্ছেন পাঠক লক্ষ্য করুন। দুইটি স্লুইস গেটের ফাটলের কারণে গঙ্গার পানিপ্রবাহ প্রত্যাহার সামান্য বিঘিœত হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘রাজ্যের এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে?’ দেখুন কত বড় উদ্বেগ তাঁর।
আর এদিকে স্বাধীন বাংলাদেশের অবস্থার কথা আরেকবার ভাবুন। চল্লিশ বছর দেশের উজানে গঙ্গাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীতে প্রতিবেশী ভারত শত শত বাঁধ দিয়ে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার ফলে দেশের প্রায় অর্ধেক অঞ্চল যে আধা-মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে, কৃষি-মৎস্য-গবাদিপশু-প্রকৃতি-পরিবেশ ও জনজীবনের যে ভয়াবহ ধ্বংসসাধন হয়েছে সেই ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে তার জন্য কোনো কৈফিয়ৎ বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রী কি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে অন্তত মমতা ব্যানার্জীর মত করেও আজ পর্যন্ত তুলতে পেরেছেন? এমনকি দেশমাতৃকার বুকে মানবসৃষ্ট এই মহাবিপর্যয়ের কথা আজ পর্যন্ত বিশ্বদরবারে  (কোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে) তুলতে পেরেছেন কি আমাদের কোনো প্রধানমন্ত্রী বা কোনো সরকার প্রধান? প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব তো ভারতকে বাংলাদেশের ‘মরণফাঁদ’ ফারাক্কা বাঁধ চালু করার সম্মতি প্রদানের মাধ্যমে নিজের পায়ে কুড়োল মেরে ‘জাতির পিতা’র দায়িত্ব পালন করে ইহলোক ত্যাগ করেছেন। কিন্তু এই ঐতিহাসিক ভুলের মুল্যায়ন দেশের কোনো সরকার, কোনো সরকারপ্রধান কি আজ পর্যন্ত করেছেন? প্রকাশ্যে অথবা গোপনে দিল্লির নতজানু হওয়া ছাড়া অন্তত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মত করেও দিল্লির পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোনো চিৎকার দিতে পেরেছেন কি আমাদের কোনো প্রধানমন্ত্রী?
তাই আজ মনে প্রশ্ন জাগে, লাখ লাখ শ্রমিক-কৃষক-সাধারণ জনগণের প্রাণের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত যে দেশটিকে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ বলে দাবি করা হয়, সেই দেশের সরকার ও সরকারপ্রধানরা যখন দেশপ্রেমের পরীক্ষায় প্রতিবেশী দেশের একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও হেরে যান, সেই দেশের ভাগ্যবিপর্যয় কে  ঠেকাতে পারে বলুন?
 রইসউদ্দিন আরিফ : লেখক, গবেষক, কলামিস্ট,

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন