রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১১

ফারাক্কার প্রভাবে পাবনার ১২টি নদী হারিয়ে গেছে

ফারাক্কার অভিশাপে পাবনা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ছোটবড় ১২টি নদী প্রায় মরে গেছে। পানির অভাবে নদীগুলো নাব্য হারিয়ে ফেলায় নৌযোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। সর্বপরি পরিবেশগত ভারসাম্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। পাবনা জেলার ১ হাজার ৯শ’ বর্গমাইল আয়তনের মধ্যে নদীগুলোর বিস্তৃতি হচ্ছে ১৭৫ বর্গমাইল। এর সবই হচ্ছে মূল পদ্মা ও যমুনা নদীর শাখা, প্রশাখা। এই নদীগুলোর অধিকাংশই বছরের ৬/৭ মাস পানির অভাবে শুকিয়ে যায়। নদীগুলো হলো—হুড়াসাগর, ইছামতি, চিকনাই, বড়াল, গোমতী, দুধসাগর, গুমানী, গাঙ্গনী, গাগড়াখালী, কাটাজোলা ও দুবলিয়া নদী।
পাবনা শহরের কাছে পদ্মা নদীর উত্পত্তি স্থল থেকে ইছামতি নদী এঁকেবেঁকে জেলার তিনটি থানার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এসে বেড়া থানার হুড়াসাগর নদীতে মিশেছে। নদীটি প্রায় ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ; এর উত্পত্তিস্থল হুড়াসাগর নদীর মোহনার কাছে প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশ অবরুদ্ধ হয়ে আজ মৃত প্রায়। পাবনা জেলার নদী পদ্মা রয়েছে ১৭০ কিলোমিটার জুড়ে। নদীর মাঝে ছোট বড় অসংখ্য চর জেগে ওঠার পানির প্রবাহ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যমুনা নদী। পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলা মিলে এই নদীর প্রবাহমান অংশের দৈর্ঘ ১৪৪ কিলোমিটার।
বর্ষা মৌসুমের প্রথম ও শেষের দিকে নদীর কয়েকটি অংশে দেখা দেয় ভয়াবহ ভাঙন। এর কবলে পড়ে প্রতি বছর গৃহহারা হয় হাজার হাজার পরিবার। নদী পাড়ের ফসলি জমি নদীর করাল গ্রামে বিলীন হয়। নৌ-পরিবহনের ক্ষেত্রে যমুনার অপরিসীম গুরুত্ব থাকা সত্ত্বে নাব্য কমে যাওয়ায় পণ্য ও যাত্রীর পারাপার বিঘ্নিত হয়। গুমানী নদীর খাত বেয়ে আত্রাই নদীর পানি গিয়ে পড়েছে বড়াল নদীতে।
চাটমোহর থানা সদরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বড়াল গিয়ে মিশেছে শাহজাদাপুর থানার মোয়াকোলার কাছে হুড়াসাগর নদীতে। বড়ালের দৈর্ঘ ৬০ কিলোমিটার। এ নদীতেও এবার পানি আসেনি।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কবিবুর রহমান বলেন, জলবায়ু পবির্তনের কারণে পৃথিবীর নদীগুলোর ভূগর্ভস্থ উচ্চতা বেড়েছে এবং পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এছাড়াও পদ্মা নদীর উত্পত্তি স্থল থেকে এ সব নদীর প্রবাহ হয়ে থাকে। সেই পদ্মায় যদি পানি না আসে। তা হলে তার শাখা নদী মরে বা হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন