শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১১

বাড়িভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য দেখার কি কেউ নেই

এতে কাটা পড়ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শহুরে মানুষের স্বপ্ন   
বাড়িভাড়া আইন মানছেন না ঢাকার বাড়িওয়ালারা। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে, ডিসিসির নির্ধারিত ভাড়া না মেনে বছর শেষ না হতেই তারা ভাড়াটিয়াদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন লাগামহীন ভাড়াবৃদ্ধির নোটিশ। আর এভাবে বছরের পর বছর ভাড়াবৃদ্ধির খড়গে কাটা পড়ছে মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত শহুরে মানুষের স্বপ্ন। কঠিন হয়ে যাচ্ছে জীবনমান টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম।
এদিকে নির্ধারিত ভাড়ার ৩/৪ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করলেও বাড়িওয়ালারা ডিসিসি নির্ধারিত ভাড়ার অনুপাতেই কর দিয়ে যাচ্ছেন। এসব দেখেও দেখছে না কর্তৃপক্ষ। ডিসিসি জানিয়েছে অঞ্চল অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করার দায়িত্ব তাদের হাতে থাকলেও সেই ভাড়া-সীমা বাড়িওয়ালারা মানছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব ডিসিসির নয়। এছাড়া বাড়িভাড়া আইন বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট কোনো সংস্থা বা ব্যক্তি না থাকায় এ ক্ষেত্রে চলছে চরম নৈরাজ্য। বাড়িওয়ালারা ইচ্ছামাফিক বাড়িভাড়া বাড়িয়ে গলা কাটছে ভাড়াটিয়াদের। অনিয়মতান্ত্রিক ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভাড়াটিয়ার প্রতি বাড়িওয়ালার সাফ জবাব 'বাড়ি ছেড়ে দিন'। কিন্তু বাড়ি ছেড়ে দিতে বললেইতো আর বাড়ি ছাড়া যায় না। তীব্র আবাসন সঙ্কটের এ শহরে সাধ্যের মধ্যে আরেকটি বাসা খোঁজা যেমন বিড়ম্বনার তেমনি কষ্টসাধ্য। শেষতক বাড়িওয়ালার স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম মুখ বুঁজে সহ্য করে এবং বাধ্য হয়েই বাড়তি ভাড়া গুনতে হয় ভাড়াটিয়াদের। এজন্য কমাতে হয় সংসারের অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচাদি। কেননা দূর্মুল্যের বাজারে মানুষের আয়তো আর বাড়ছে না; বরং ক্রমশ বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্য। সেখানে বছর শেষান্তে আবাসন ভাড়া বৃদ্ধির নোটিশকে
খড়গের চেয়ে ভয়ানক কিছু মনে হতেই পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীর পুরান ঢাকা, কমলাপুর, মগবাজার, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, মৌচাক, ইস্কাটন, মহাখালী, কাঁঠালবাগান, কাজীপাড়া, শ্যাওড়াপাড়া, ইন্দিরা রোড, গুলশান, বনানী, উত্তরাসহ ঢাকার প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই বাড়িভাড়া বৃদ্ধির জন্য এ মাসেই ভাড়াটিয়াদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সরকারের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, দুই বছর পর বাড়ির মালিক মানসম্মত হারে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করতে পারবেন। কিন্তু ভুক্তভোগী ভাড়াটেরা জানান, এ আইন কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ নেই। দেখারও কেউ নেই। অথচ ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গোটা ঢাকা শহরকে ১০টি রাজস্ব অঞ্চলে ভাগ করে পৃথক ভাড়া নির্ধারণ করে দেয় ডিসিসি। কিন্তু এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ডিসিসির নির্ধারিত ভাড়া কোথাও কার্যকর হয়নি।
জানা যায়, ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিসিসি আবাসিক এলাকাকে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। মেইন রোডের পাশে, গলির তিনশ' ফুটের মধ্যে এবং গলির তিনশ' ফুটের বাইরে একেক রকম ভাড়া ধার্য করা আছে। এছাড়া আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প- এ তিন ক্যাটাগরিতেও ভাগ করা হয়েছে ভাড়া। এর মধ্যে হোল্ডিং নাম্বার, নির্মাণের সময়কাল, কাঠামো, নির্মাণশৈলী, অবস্থান ও পজেশন হস্তান্তরের শর্তের ওপর ভিত্তি করে ভাড়ার তারতম্য হতে পারে বলে বিধান রয়েছে। কিন্তু মালিকরা এসব নিয়ম তোয়াক্কাই করছেন না। ভাড়া নিচ্ছেন ফ্রিস্টাইলে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডিসিসির বিভিন্ন কর অঞ্চলে ক্যাটাগরি অনুযায়ী বাড়িভাড়ার পৃথক তালিকা থাকলেও এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না অধিকাংশ বাড়িওয়ালা_ এমনকি ভাড়াটিয়ারাও। তাই ঢাকায় বাড়িভাড়া নিয়ে বাড়িওয়ালার স্বেচ্ছাচারিতা যেমন দিনদিন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে ভাড়াটিয়াদের ওপর নিষ্পেষণও।
কিন্তু সাধারণ ভাড়াটিয়াদের ভোগান্তি কমাতে সরকারের সংশ্লিষ্টদেরও কোনো উদ্যোগ নেই। প্রয়োগ নেই বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯১ ও বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ-১৯৬৪'।
বাড়িভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে ডিসিসির প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, সরকার বাড়িভাড়া নির্ধারণে ডিসিসিকে কোনো ক্ষমতা দেয়নি। ডিসিসি শুধু প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে এবং হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের জন্য আনুপাতিক হারে একটি বাড়িভাড়া নির্ধারণ করে দেয়। এ তালিকা অনুযায়ী ভাড়া-সীমা মানা হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব ডিসিসির নয়।
জানা গেছে, বাড়িওয়ালারা ডিসিসি নির্ধাারিত ভাড়ার ৩/৪গুণ বেশি আদায় করলেও তারা ডিসিসির নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে বাড়িওয়ালারা বিশাল অঙ্কের কর ফাঁকি দিয়ে চলেছেন। এক্ষেত্রে ডিসিসির কিছু কর্মকর্তা ঘুষের বিনিময়ে বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণের ক্ষেত্রেও ডিসিসি বাড়িগুলোকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। সম্পূর্ণ ভাড়া দেয়া ইমারত, সম্পূর্ণরূপে মালিক কর্তৃক ব্যবহার করা বাড়ি এবং আংশিক ভাড়া ও আংশিক মালিক কর্তৃক ব্যবহৃত বাড়ির জন্য হোল্ডিং ট্যাক্স পৃথক রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে আনেক মালিকই স্থানীয় কর কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে তাদের বাড়িগুলো নিজেই ব্যবহার করছেন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকি দেন। যেসব বাড়ির মালিক ধনী এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী তারা সাধারণত ট্যাক্স দিতে উৎসাহী নন। রাজস্ব কর্মকর্তারাও এদের তেমন ঘাঁটেন না।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজস্ব অঞ্চল-৩ এর অধীন ঝিগাতলার জন্য মেইন রোডের পাশে প্রতি বর্গফুট স্পেসের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা আছে ৮ টাকা। কিন্তু নেয়া হচ্ছে এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। অভিজাত এলাকা বলে পরিচিত ধানম-িতে ১,২০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের ভাড়া নেয়া হচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু ডিসিসির ক্যাটাগরি অনুযায়ী ওই ফ্ল্যাটের ভাড়া হওয়ার কথা ১৪,৪০০ টাকা। একই চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর অন্য এলাকাগুলোতেও। শুক্রাবাদ, রায়ের বাজার ও তেজকুনীপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, ছোট্ট আধাপাকা ঘরে একরুমের ভাড়া নেয়া হচ্ছে তিন হাজার টাকা। এরকম একেকটি রুমে ১০ / ১২ জন মানুষ গাদাগাদি করে থাকে।
মেহাম্মাদপুরের চান মিয়া হাউজিংয়ে একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া সামিহা হোসেন মুনা জানান, দুই বছর হলো তিনি ওই বাসায় উঠেছেন। প্রতি বছর তার বাড়িওয়ালা ১ হাজার টাকা করে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করছেন। এছাড়াও ভাড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন চার্জও পরিশোধ করতে হয় তাকে। তাই বাজেটের চেয়ে ভাড়া বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে এ বছর বাসা ছেড়ে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের বাসায় উঠেছেন তিনি।
মিরপুরের সেনপাড়া পাড়ার এক ভাড়াটিয়া শাহ নিগার সুলতানা। তিনি জানালেন, একটি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করে তার যে আয় হয় তার অর্ধেকের বেশি চলে যায় বাসা ভাড়ায়। ছয় মাস আগেও এক দফা বাড়ির ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। এখন নতুন বছরে বাড়িওয়ালা আবার ভাড়া বাড়াবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সামান্য বেতনে চাকরি করে ঢাকায় পরিবার নিয়ে থাকা এবং জীবনমান ঠিক রাখা এখন রীতিমতো হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাড্ডার ভাড়াটিয়া জাহিদুল হক রাহাত অভিযোগ করেন, 'তারা বাড়িওয়ালাদের কাছে জিম্মি। তারা যা বলেন তাই মেনে নিতে হয়। মেনে না নিলে বাসা ছেড়ে দেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। আবার নতুন বাসায় উঠতে হলে নতুন করে অগ্রিম দিতে হয়। সেই অগ্রিমের টাকাতো আর সবসময় হাতে থাকে না। তাই মুখ বুঁজে সব মেনে নিতে হচ্ছে।
এ ব্যপারে ঢাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা জানান, সবকিছুর দাম বাড়ছে, বাড়িভাড়া কেন বাড়বে না? বাড়িওয়ালাদের অধিকাংশই বাড়িভাড়া আইন সম্পর্কে জানেন না বলেও জানান তারা।
কল্যাণপুরের নাভানা গার্ডেনের এক বাড়িওয়ালা মাহবুবুর রহমান বলেন, গ্যাস, বিদুৎ, পানি, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণেই বাড়িভাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া ডিসিসি যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে সেই ভাড়া বাস্তবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের নগর গবেষণা কেন্দ্রের সাম্প্রতিক তথ্যে উঠে এসেছে, নগরীর শতকরা ৭০ ভাগ মানুষই তাদের আয়ের শতকরা ৬০ ভাগ ব্যয় করেন বাড়িভাড়ার পেছনে। কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলদেশ (ক্যাব) পরিচালিত এক জরিপ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সালে গড়ে শতকরা বাড়িভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ দশমিক ৮৫ ভাগ। এর মধ্যে পাকাবাড়িতে ১০ দশমিক ২০ ভাগ। আধাপাকা ১৮ দশমিক ১৮ ভাগ, কাঁচাবাড়ি ১৪ দশমিক ২৯ ভাগ। ক্যাব'র জরিপ অনুযায়ী ২০০০ সালে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ দশমিক ০৮ শতাংশ, ২০০১ সালে ১৭ দশমিক ৪০, ২০০২ সালে ১৩ দশমিক ৪৯, ২০০৩ সালে ৮ দশমিক ৪০, ২০০৪ সালে ৯ দশমিক ৯৬, ২০০৫ সালে ৭ দশমিক ৮৯, ২০০৬ সালে ১৪ দশমিক ১৪, ২০০৭ সালে ২১ দশমিক ২৮ এবং ২০০৮ সালে ২১ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং ২০১২ সালে এর রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা
বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত অধ্যাদেশটি প্রথম জারি করা হয় পাকিস্তান আমলে ১৯৬৩ সালে। এর অধীনে ১৯৬৪ সালে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়, যা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর একযুগেরও বেশি সময় ধরে (১৯৮৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) বলবৎ ছিল। তৎকালীন এরশাদ সরকার ১৯৮৬ সালের ২২ নাম্বার অধ্যাদেশ দ্বারা বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ জারি করে ১৯৬৩ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশটি বাতিল করে। এর পর আবার জাতীয় সংসদের অবর্তমানে বাংলাদেশ সংবিধানের ৯৩ (১) অনুচ্ছেদে বর্ণিত ক্ষমতাবলে তৎকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ বর্তমানে প্রচলিত বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১ জারি করেন।
১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া আইনের ১৩ (১) ধারা মোতাবেক বাড়িভাড়ার রসিদ ভাড়াটিয়াকে তথ্য দিতে হবে। কিন্তু বেশির ভাগ বাড়িওয়ালা ভাড়া নিয়ে রসিদ দেন না। ভাড়া নিয়ে মালিক-ভাড়াটিয়ার মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে উভয়ই রেন্ট কন্ট্রোল বিভাগের শরণাপন্ন হতে পারবেন এবং বিবাদ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রেন্ট কন্ট্রোল বিভাগেই ভাড়া পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে।
১৬ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ভাড়াটিয়ার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি সাপেক্ষে দুই বছর পর ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করা যেতে পারে। আইনের 'দ' ধারার ২৩-এ বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি জ্ঞাতসারে কোনো কারণে বেশি ভাড়া গ্রহণ বা জামানত বাবদ ১ মাসের অধিক ভাড়া গ্রহণ করে তাহলে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমবার অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকার দ্বিগুণ পর্যন্ত অর্থদ-ে দ-িত হবে। পরে প্রত্যেকবারের অপরাধের জন্য ওই অতিরিক্ত টাকার তিনগুণ অর্থদ-ে দ-িত হবেন। প্রথম অপরাধের জন্য দু'হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদ-ে দ-িত হবেন। পরবর্তী সময়ে প্রত্যেকবারের জন্য জরিমানা হবে পাঁচ হাজার টাকা। কার বাসা ভাড়া কত হবে তা নির্ধারণ করার আইন আছে। বাড়িভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে প্রথমেই বাড়ির মালিকের সঙ্গে একবছরের জন্য চুক্তি করতে হবে।

হাইকোর্টের রুল
গত বছরের ১৮ মে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধানগুলো কার্যকর করার কেন নির্দেশ দেয়া হবে না_ তা জানতে চেয়ে সরকার ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) প্রতি রুল জারি করে হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ডিসিসির মেয়রকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয় আদালত। বিচারপতি মো. মমতাজউদ্দিন আহমেদ ও বিচারপতি নাঈমা হায়দারকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ প্রদান করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে ভাড়ার রসিদ প্রদান, বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেয়া, বাড়িভাড়া চুক্তিসহ বিভিন্ন বিধান রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ বাড়িওয়ালা আইনের বিধান ভঙ্গ করে ইচ্ছামতো ভাড়াবৃদ্ধি, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়ে থাকে। এমনকি বাড়ি ভাড়ার রসিদও দেয় না। আবেদনে বলা হয়, ডিসিসি কর্তৃক নির্ধারিত বাড়িভাড়া আদায়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এছাড়া বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীনে রুলস প্রণয়নের বিধান থাকলেও আজ পর্যন্ত তা করা হয়নি। ভাড়ার ক্ষেত্রে অনেক বাড়িমালিকের বেআইনি কর্মকা-ের কারণে হাজার হাজার ভাড়াটিয়া অমানবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ায় জনস্বার্থে ওই রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন