সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১১

গঙ্গা রক্ষায় নভিৃত অনশনে প্রাণ দলিনে নগিমানন্দ


নিগমানন্দ

লক্ষ্য প্রায় একই, পথও। শুধু প্রচারপন্থার ভিন্নতার কারণে দুটি মানুষকে মেনে নিতে হলো ভিন্ন ললাটলিপি। ভারতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইরত বাবা রামদেব যেখানে অসংখ্য ক্যামেরার ফ্ল্যাশলাইটের জ্বলজ্বলে আলোয় ফলের রস খেয়ে অনশন ভেঙেছেন, সেই একই হাসপাতালে একেবারে বিপরীত ভাগ্য মেনে নিলেন আরেক সাধু স্বামী নিগমানন্দ। দুর্নীতি নয়, তাঁর লড়াই ছিল গঙ্গাকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর। অনশনের অস্ত্র নিয়ে ১১৪ দিন ধরে লড়াই করার পর গত সোমবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
উত্তরাখণ্ড রাজ্যের হরিদ্বারের মাতৃসদন আশ্রমের সাধু নিগমানন্দ (৩৪) ব্যবসা গত কয়েক বছর থেকে চলছে, তার বিরুদ্ধেই আওয়াজ তোলেন তিনি। এমনিতেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একের পর এক পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কারণে নদীর অস্তিত্ব নিয়েই শঙ্কিত পরিবেশবাদীরা। তার ওপর ক্রাশারে পাথর ভাঙার ব্যবসা পরিবেশের ওপর চূড়ান্ত বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই অবস্থার বিরুদ্ধে লড়তেই ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে অনশন শুরু করেন নিগমানন্দ।
এক মাস অনশন করার পর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করলে তাঁকে দেরাদুনের হিমালয়ান ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এই একই হাসপাতালে গত সপ্তাহে ভর্তি করা হয় যোগগুরু রামদেবকেও। গত রবিবার তাঁকে যখন অনশন ভাঙানো হচ্ছিল, তখন মৃত্যুর আরো নিকটবর্তী হচ্ছিলেন নিগমানন্দ। পরদিনই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। গতকাল বুধবার চিকিৎসকরা তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভারতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুর্নীতি ও সরকারের নানা কেলেঙ্কারির কারণে দফায় দফায় অনশন করার ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে মানবতাবাদী কর্মী আন্না হাজারের অনশন দেশজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে। আলোচনা হয় মেধা পাটেকর ও বাবা রামদেবের বিষয়টিও। তবে তাঁদের কোনো ঘটনাই মৃত্যু পর্যন্ত গড়ায়নি। নিগমানন্দের পরিবার এই মৃত্যুর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগও তুলেছে তারা। সূত্র : এএফপি, আনন্দবাজার পত্রিকা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন