শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১১

যশোরে একক অলোচনাসভায় বেনজীন খান

সামনে শোষণহীন সমাজের হাতছানি
খুব শিগগির বাংলাদেশে গজব নেমে আসবে


যশোর : ‘সরকার যখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন তারা পুলিশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। আর তাদের কুকর্মের সাফাই গাইতে থাকে। যেমনটি হচ্ছে আমাদের এই বাংলাদেশে। আমাদের নির্লজ্জ সরকারপ্রধান তার পেটোয়াবাহিনীর সকল কুকর্মকে জায়েজ করতে নির্দ্বিধায় বানোয়াট সব তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরার অপচেষ্টা করছে।’ -কথাগুলো বলছিলেন বিশিষ্ট লেখক গবেষক সাংবাদিক বেনজীন খান। বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোরের দড়াটানা ভৈরব শহিদ চত্বরে তরুণ সমাজ আয়োজিত ‘অস্থির অর্থনীতি, অশান্ত পৃথিবী এবং আমরা ’ শীর্ষক একক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।
বেনজীন খান বলেন, ‘এই দেশে খুব শিগগিরই গজব নেমে আসবে। কেননা এদেশে শিক তার ছাত্রীকে ধর্ষণ করে, ডাক্তার রোগীর কিডনি চুরি করে বিক্রি করে, বিচারক ঘুস খেয়ে রায় দিচ্ছে আর রাজনীতিকরা জনগণকে জিম্মি করে ফায়দা লুটছে।’ একক আলোচনাসভায় তিনি আরও বলেন, ‘সারাবিশ্বের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। আর শোষিত হচ্ছে গোটা দুনিয়ার নিরীহ সাধারণ মানুষ। পুঁজিবাদের এই নোংরা কলুষিত চেহারা আজ উন্মুক্ত হয়ে গেছে গোটাবিশ্বের কাছে। সেকারণে অকুপাই ওয়ালস্ট্রিটে কলেজছাত্ররা বিােভ করছেন। তারা এই এক শতাংশ শোষকের কাছে ৯৯ শতাংশ মানুষের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন। তাদের সে লড়াই পৃথিবীর ৮২ দেশের ৯শ’৯১ শহরে তা ছড়িয়ে পড়েছে।’ তিনি বলেন,‘আমেরিকার অর্থনীতিতে ব্যাপক ধস নামে। সেই অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতেই ১৯৯৯ সালে নিজেরাই টুইন টাওয়ারে হামলা চালায়। ওসামা বিন লাদেন ও তার সংগঠনকে সন্ত্রাসী জঙ্গী আখ্যা দিয়ে তাদের তাঁবু গাড়ে আফগানিস্তানে। এর কারণ হচ্ছে তালেবান সরকার ও তার প্রধান মোল্লা ওমরের কাছে সেখানে মার্কিন সরকার চেয়েছিল স্থায়ী অবস্থান তৈরি করতে। কিন্তু প্রচ- অভিজাত তালেবান সরকার মার্কিনীদের সে খায়েশ পূরণে সায় দেয়নি।’ তিনি বলেন,‘আমেরিকার কাছে ওসামা বিন লাদেন ছিলেন বিশাল থ্রেট। তিনি বিশ্বমানবতা মুক্তির জয়গান গেয়েছেন। সেকারণে আফগানিস্তানে সন্ত্রাস দমনের নামে বর্বর হামলা চালানো হয়। কিন্তু তাতে একটু দমেনি সেদেশের মানুষ।’ বেনজীন খান বলেন, ‘সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে ১৬টি রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে বিশ্ব ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। মার্কিন ও তার দোসররা একচ্ছত্র আধিপত্য গড়ে তোলে। কিন্তু পুঁজিবাদের সেই মুখোস আজ সবার কাছে উন্মোচিত হয়ে পড়েছে।’ শোষণহীন মানুষের সমাজ অবশ্যম্ভাবী দাবি করে তিনি বলেন,‘দর্শণ জগতের নবীখ্যাত কার্ল মার্কস, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, সাহিত্যিক তলস্তয়, সমাজবিজ্ঞানী হেনরি মর্গানের যে চিন্তাধারা আর তাদের ভবিষ্যদ্বাণী তা আজ ফলতে শুরু করেছে। মানুষের দুঃখ-দুর্দশার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদবিরোধী সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন আমাদের সেই নির্দেশনায় দিচ্ছে।’
যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আহমেদ শাকিলের সভাপতিত্বে ঘণ্টাব্যাপী এই একক আলোচনাসভায় বেনজীন খান জানান, ‘আওয়ামী লীগ সরে গিয়ে বিএনপি এলে আমাদের মুক্তি নেই। সাধারণ মানুষের ভাগ্য গড়তে নিজেদের অধিকার নিজেরাই আদায় করতে হবে। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক বা মানবতাধ্বংসকারী রাজনৈতিক দল আর না। আমাদের ৯৯ শতাংশ সাধারণ মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে, তবেই মুক্তি।’#

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন