শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১১

সম্পাদকীয়

মুক্তিআন্দোলন বাংলাদেশ একটি পাঠচক্র। গণতান্ত্রিক চেতনা বিকাশে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতার পাঠচক্র। দেশ-বিদেশের সমকালিন সকল রাজনৈতিক ঘটনাসমূহের বিচার-বিশ্লেষণ ও তৎঘটনায় আপন অবস্থান নিরীক্ষে অংশগ্রহণকে মুক্তিআন্দোলন সব সময় গভীর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। মুক্তিআন্দোলন মনে করে, ঘটে যাওয়া যে কোনো কাজ সম্পর্কে দেখলে, শুনলে, জানলে ব্যক্তির পক্ষে আর ঘটনা নিরপেক্ষ থাকা সম্ভব নয়। হয় তাকে স্বীকার করে মানতে হয় নতুবা বিরোধ এর বাইরে তৃতীয় কোনো অবস্থান মানুষের জন্য আর অবশেষ নেই। অথবা তাকে সংঘত্যাগ করতে হয় কিন্তু মানুষ যে সামাজিক জীব। ফলে মানুষ সব সময়ই ঘটনার অংশ, আমরা গ্রহণ করে থাকি গোলটেবিল বৈঠক অথবা সেমিনারের কর্মসূচি। মুক্তিআন্দোলনের অধ্যয়নের ধরণ সংঘগত-যুথবদ্ধ। যে ব্যবস্থাকে আমরা জেনে থাকি ডড়ৎশংযড়ঢ় বা কর্মশালা বলে। ইতোপূর্বে আমরা প্রথম অধ্যয়ন করেছি আমাদের ইতিহাস এবং অবশ্যই তা রাজনৈতিক ইতিহাস। আমাদের পরবর্তি সংঘগত অধ্যয়নের তালিকায় রয়েছে (ক) ‘বাংলার ভাব ও ভাবুক’ অর্থাৎ চিন্তা ও চিন্তক বা দর্শনের ইতিহাস (খ) বাংলার দ্রোহের ইতিহাস, সেই কৈবর্ত বিদ্রোহ থেকে বাংলার গণ, ব্রাত্য বা লোকমানুষের ধারাবাহিক দ্রোহের ইতিহাস (গ) বাংলার শিক্ষার ইতিহাস, যে শিক্ষা আমাদের নিজস্ব উৎপাদন, জীবন ও প্রকৃতি থেকে এসেছিল; হয়তো বা সেটিই আমাদের বিজ্ঞানেরও ইতিহাস একই সাথে।
আমাদের বিশ্বাস এই তিনটি কাজ শেষ করতে পারলে আমরা খুঁজে পাব আমাদের সমাজ দেহের নাড়ি বা আমাদের শক্তির আঁধার। মুক্তিআন্দোলন একই সাথে বিশ্বাস করে, শুধু বুদ্ধিবৃত্তিক এই উপরি কাজই যথেষ্ট নয় বরং জরুরি প্রায়োগিক কাজ। মানুষ, প্রকৃতি ও উৎপাদনের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার কাজ। সে লক্ষে মুক্তিআন্দোলনের কর্মীরা গত কোরবানির সময় আপনার কোরবানির অর্থ একত্রে করে যশোরের দুটি গ্রামে ৬০টি গরীব পরিবারের মধ্যে বকরি (মেয়েছাগল) প্রদান করে। যা একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে থাকবে। মুক্তিআন্দোলন এই প্রায়োগিক কাজটিকে একটি গবেষণা হিসেবে নিয়েছে।
এই অনুষ্ঠান করতে গিয়ে ঐ এলাকার মানুষের মধ্যে যে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যায়, উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায় তা সত্যিই অভূতপূর্ব।
আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি যশোরের আরবপুর ইউনিয়নের সুজলপুর ও পাকদিয়া গ্রামের অধিবাসীদেরকে যাঁরা আমাদের এই কাজে অংশগ্রহণ করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর গভীরভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যাঁরা এই কর্মসূচিতে দানের হাত বাড়িয়ে সহযোগিতা করেছেন তাঁদেরকে। আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যশোরের স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোকে, বিশেষকরে লোকসমাজ, প্রভাতফেরী, সত্যপাঠ, গ্রামের কাগজ ও আগামীর কণ্ঠ-কে যাঁদের সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে আমাদের কর্মকাণ্ড মানুষের কাছে পৌঁছেছে। ধন্যবাদ জানাচ্ছি যশোরের সামাজিক সংগঠন ‘তরুণ সমাজ’কে। তরুণ সমাজের ছেলেরা যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের কাজকে সহজ করে দিয়েছে তা ভুলবার নয়। ধন্যবাদ জানাচ্ছি যশোর শহরে আমার বিশাল বন্ধু সমাজের এক অংশের বন্ধুদেরকে বিশেষ করে বাচ্চু, ডিজু, সাবু, খোকন, মাসুম, ডাব্লিউ, শিপলু, শাহীন, ফরিদ ভাই ও রুহুলকে। তাদের উৎসাহ আমাদেরকে উদ্দীপ্ত করেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন