শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১১

জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হতে আজ প্রস্তাব তুলছে ফিলিস্তিন


ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদের প্রস্তাব আজ শুক্রবার সাধারণ পরিষদে উত্থাপন করা হচ্ছে। এ প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেবে বলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রস্তাবটি জাতিসংঘে উত্থাপনের ব্যাপারে অনড়। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনও ফিলিস্তিনের স্বীকৃতির পক্ষে কথা বলেছেন।
গত বুধবার নিউইয়র্কে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও পূর্ণ সদস্যপদের প্রস্তাব জাতিসংঘে তোলা হলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে ভেটো দেবে।
একই দিন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গেও বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বৈঠকে তিনি নেতানিয়াহুর কাছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার করেন।
অথচ গত বছর প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যেই তিনি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বাস্তব রূপ দেখতে চান।

সাধারণ পরিষদের ভাষণে ওবামা বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে দশকের পর দশক ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সংঘাতের একমাত্র সমাধান আলোচনা।’
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কঠোর বিরোধিতা এবং ইসরায়েলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনে ওবামার প্রতি ভীষণ প্রসন্ন তেলআবিব। ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ায় ওবামাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ওবামা বড় ধরনের সম্মান পাওয়ার দাবি রাখেন।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ব্যাপারে ওবামার তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। আজ শুক্রবার তিনি সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন। এর পরই তিনি এ-সংক্রান্ত একটি লিখিত প্রস্তাব জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে পেশ করবেন।
মহাসচিব বান কি মুন ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি-প্রক্রিয়ার অচলাবস্থা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। বুধবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরেই বলছি, ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়া উচিত। পাশাপাশি আমরা ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথাও বলে আসছি।’
ফিলিস্তিনের স্বীকৃতির প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদে পাস হতে পরিষদের ১২৮টি সদস্যদেশের সমর্থন প্রয়োজন। সাধারণ পরিষদের মোট ১৯৩ সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১২২টি দেশ ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফিলিস্তিনি নেতারা আশা করছেন, চলতি প্রচারণার ফলে এখন আরও ছয়টি দেশের সমর্থন তাঁরা পেয়ে যাবেন। সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি পাস হলে এবং মহাসচিব বান কি মুন অনুমোদন করলে সেটি নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো হবে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে নয় সদস্যের সমর্থন এবং কোনো স্থায়ী সদস্যের পক্ষ থেকে ভেটো না দেওয়া হলে আবেদনটি পাস হবে।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন ও রাশিয়া ফিলিস্তিনকে এরই মধ্যে স্বীকৃতি দিলেও ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। আর পরিষদের বর্তমান অস্থায়ী সদস্য বসনিয়া, ব্রাজিল, গ্যাবন, নাইজেরিয়া, লেবানন, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে অস্থায়ী সদস্য কলম্বিয়া, জার্মানি ও পর্তুগাল এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। রয়টার্স, এএফপি ও বিবিসি অনলাইন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন